পাঁচ বছরের মেয়ে খাদিজার চিকিৎসার জন্য শহরে আসছিলেন মা সোনিয়া বেগম। সঙ্গে ছিল তার এক বছর বয়সী জমজ সন্তান হাসান-হোসাইন, তার মা মাহিমা বেগম (৪৭), খালা রাহিমা বেগম (৩২) ও খালাতো বোন জেবা খাতুন (৮)। কিন্তু পথে তাদের বহনকারী ইজিবাইকটি দুর্ঘটনায় কবলিত হয়ে শেষ হয়ে গেল গোটা একটি পরিবারের স্বপ্ন। 

সোনিয়া বেগম ও তার মেয়ে খাদিজা ছাড়া আর কেউ বেঁচে নেই। এ দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৫ জনসহ নিহত হয়েছেন মোট ৭ জন। গতকাল শুক্রবার (৭ জুলাই) যশোর মাগুরা মহাসড়কের লেবুতলা এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। 

নিহত ৫ জন বাঘারপাড়া উপজেলার যাদবপুর গ্রামের বাসিন্দা। শবিবার (৮ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় নিহতদের জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়। এ ঘটনায় সোনিয়া বেগম ঢাকা মেডিকেল ও মেয়ে খাদিজা খাতুন আহত অবস্থায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

নিহত হাসান-হোসাইনের দাদা জলিল মুন্সী জানান, খাদিজার গলায় টনসিল হয়েছিল। তার বাবা হেলাল মুন্সী পেশায় একজন গার্মেন্টস কর্মী। ঢাকায় থাকেন। মেয়ের টনসিলের চিকিৎসার জন্য টাকা পাঠিয়েছিলেন। তাই মা, খালা ও দাদি খাদিজার চিকিৎসার জন্য খাজুরা বাজার থেকে ইজিবাইকে করে যশোর যাচ্ছিল। পথিমধ্যে যশোরের লেবুতলায় রয়েল কোচ পরিবহনের একটি বাস ওই ইজিবাইকটিকে চাপা দেয়। এতে জমজ শিশু হাসান-হোসাইনসহ তার পরিবারের পাঁচজন ঘটনাস্থলে নিহত হন।

আরও পড়ুন : যশোরে বাসচাপায় নিহত ৭

মাহিমা খাতুনের দেবর ইমরান মুন্সী জানান, এ দুর্ঘটনায় পুরো তিনটি প্রজন্ম শেষ হয়ে গেছে। এ ক্ষতি কোনদিন পূরণ হবার নয়। তবে এদের পরিবার হতদরিদ্র, তাদের শোকাহত পরিবারের প্রতি সরকারের সার্বিক সহোযোগিতার দাবি করছি।

এদিকে আজ শনিবার (৮ জুলাই) সকাল থেকে যশোর মাগুরা মহাসড়কে ইজিবাইক, অটোভ্যান, ও অবৈধ যানবহনের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।

খাজুরা পুলিশ ক্যাম্পের উপ পরিদর্শক (এসআই) অভিজিৎ সিংহ রায় ঢাকা পোস্টকে জানান, গতকাল সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত হয়েছেন। এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। আমরা গত ২ তারিখ থেকে সড়কে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। আজ সকাল থেকে এ অভিযান আরও জোরদার করা হয়েছে। 

এ্যান্টনি দাস অপু/আরকে