পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম বলেছেন, কোনো শিক্ষার্থীর টাকার অভাবে পড়াশোনা বন্ধ হবে না। শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকলে শিক্ষার মান উন্নয়ন হয়, শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়ে না। কোনো শিক্ষার্থী থেকে ফরম পূরণ বা টিউশন ফি বেশি নেওয়া যাবে না। যেসব শিক্ষার্থীরা টাকার অভাবে ফরম পূরণ করতে পারবে না কিংবা অর্থের অভাবে ঝরে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাদের পড়াশোনার খরচ আমি বহন করব।

শনিবার (৮ জুলাই) বেলা ১১টায় শরীয়তপুরে শিক্ষার্থীদের মাঝে অনুদানের চেক ও বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন। 

এ সময় তিনি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলা পরিষদ হল রুমে উপজেলার ১৫০ জন মেধাবী শিক্ষার্থীর মাঝে ট্যাব, ধর্মীয় ৩৯টি প্রতিষ্ঠানে ২০ লাখ টাকার চেক প্রদান করেন।

উপমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীরা দেশের ভবিষ্যৎ। তাদের সুন্দরভাবে বিকশিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগুলোকে এমপিওভুক্ত করেছেন। উপজেলা পর্যায়ে স্কুল ও কলেজ জাতীয়করণ করা হয়েছে। নড়িয়ায় শিক্ষার্থীদের জন্য খেলার মাঠ করা হয়েছে, ক্লাস সংকট নিরসনে ভবন করা হয়েছে। শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব করা হয়েছে। শিক্ষক সংকট নিরসন করা হয়েছে।  

তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে সৌদি থেকে আমি হজ করে এসেছি। সৌদিতে আগে নারীরা ঘরের বাইরে কোনো কাজ করতে পারতেন না। এখন তারা ইমিগ্রেশনসহ অফিসে কাজ করছেন। কিন্তু আমাদের দেশের মেয়েরা আগে থেকেই কাজ করেন। আগে আমাদের দেশে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ছিল না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদ সৃষ্টি করে নারী নেতৃত্বকে বিকশিত করেন। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত সকল পর্যায়ে নারীরা এখন ক্ষমতাসীন। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলে নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে।

একেএম এনামুল হক শামীম বলেন, যে ট্যাব আজ তোমরা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পেলে, সেই ট্যাব ব্যবহার করে তোমরা পৃথিবীর ইতিহাস, বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস জানতে পারবে। নড়িয়া ও শরীয়তপুরের ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারবে। ট্যাব ব্যবহার করে তোমরা গণিত ও বিজ্ঞানের জটিল সমাধান পেয়ে যাবে ইন্টারনেটের কল্যাণে। ট্যাবটি তোমাকে বিশ্ব মানের শিক্ষার্থী হিসেবে গড়ে তুলতে সহযোগিতা করবে। তোমরাই ভবিষ্যতের নড়িয়া, শরীয়তপুর, বাংলাদেশ ও বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে।

উপমন্ত্রী বলেন, গত নির্বাচনে প্রচারণায় গিয়ে আমি জানতে পারি নড়িয়ার রাজনগরে কোনো উচ্চ বিদ্যালয় নেই। আমি রাজনগর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় নামে সেখানে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছি। নড়িয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চল কাঁচিকাটাসহ উপজেলা সদরের বিহারী লাল, মজিদ-জরিনাসহ সকল স্কুলের পড়াশোনার মান শতগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত মন্তিসভার বৈঠকে শরীয়তপুরে একটি বিশ্ব মানের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের চূড়ান্ত অনুমোদন হয়েছে। তোমরা তৈরি হও, জাতির পিতার নামে অনুমোদিত সেই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে তোমরা কৃষি উন্নয়ন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহ সকল কিছু শিখতে পারবে। উচ্চতর গবেষণা করে তোমরা নড়িয়া, শরীয়তপুরকে আলোকিত করতে পারবে। তোমরা নিজেকে আলোকিত করে জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করবে।

ট্যাব, চেক ও বৃক্ষ বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শংকর চন্দ্র বৈদ্য। বিশেষ অতিথি ছিলেন নড়িয়া পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মাল, সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান খোকন, নড়িয়া উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বেপারী ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা আক্তার প্রমুখ।

সাইফুল ইসলাম সাইফ রুদাদ/এএএ