মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে কিশোরী ধর্ষণের ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা শেখ শাকিলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (৮ জুলাই) রাত সাড়ে ৩টার দিকে তাকে গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর হোগলাকান্দি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শাকিল মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। মুন্সীগঞ্জ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আটক ছাত্রলীগ নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে। যদি প্রয়োজন মনে হয় রিমান্ড আবেদন করা হবে।

থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পর মামলা পর অভিযুক্ত শাকিল পলাতক ছিলেন। প্রথমে তিনি নারায়ণগঞ্জ পালিয়ে গিয়েছিলেন। এরপর বিভিন্নস্থানে অবস্থান পরিবর্তন করে সবশেষ শনিবার রাতে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া আসেন। সেখানে রাতে অবস্থান করে অন্যত্র পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো সে। স্থানীয় সোর্স ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পুলিশ গজারিয়ায় শাকিলের অবস্থান নিশ্চিত করে। পরে গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের পুরাতন ভবনের ছাদে এক কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করে।  

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী কিশোরীর মা মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। নির্জন বাড়ি হওয়ায় নিরাপত্তার কথা ভেবে প্রায় রাতে মায়ের সঙ্গে হাসপাতালে থাকতো ধর্ষিতা কিশোরী। মঙ্গলবার রাতে মায়ের জন্য হাসপাতালে অবস্থান করছিল সে। এসময় চার-পাঁচজন সহযোগীকে নিয়ে হাসপাতালে ছিলেন স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা শাকিল। রাত সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালে লোকজন কমে গেলে জরুরি কথা আছে বলে ওই কিশোরীকে ডেকে সিঁড়ির সামনে নিয়ে প্রেমের প্রস্তাব দেন শাকিল। এতে অস্বীকৃতি জানালে একপর্যায় ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে টেনে-হিঁচড়ে হাসপাতালের ছাদে নিয়ে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি কাউকে জানালে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যান শাকিল। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়াসহ আপসের চেষ্টা চালায় অভিযুক্তপক্ষ।

এদিকে কিশোরী ধর্ষণের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্তু কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ব.ম শামীম/আরকে