কিশোরগঞ্জের হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। ঈদুল আজহার পর থেকে এমন অবস্থা বিরাজ করছে। গতকাল মঙ্গলবার (১১ জুলাই) পর্যন্ত ডায়রিয়ায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। 

বুধবার (২২ জুলাই) সকালে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, মঙ্গলবার রাত থেকে নতুন চারজন রোগী ভর্তি হয়েছেন। 

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার ১৩ উপজেলার মোট ১৪টি সরকারি হাসপাতালে মোট ৯৫ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি আছেন। এর মধ্যে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ  হাসপাতালে ৩০ জন, কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ৪৫ জন এবং বাকি ২০ জন রোগী ১২টি হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

জেলা শহরের বত্রিশ বিন্নগাও এলাকার দুই বছর বয়সী ইউসুফ ডায়রিয়াজনিত অসুস্থতায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ওই এলাকার মো. রাকিব হাসানের ছেলে ইউসুফ। গতকাল থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে। 

ইউসুফের মা বলেন, আমার ছোট বাচ্চাটা ডায়রিয়ায় দুর্বল হয়ে গেছে। ভালো চিকিৎসা না পেলে তার শরীর আরও খারাপ হয়ে যাবে।

শহরের গাইটাল নামাপাড়া এলাকার আলিয়া (১৯) ডায়রিয়াজনিত অসুস্থতায় ভুগছেন। তিনি গাইটাল নামাপাড়া এলাকার মো. সাইদুর রহমানের মেয়ে। আজ সকালে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

আলিয়া বলেন, গরম থেকে আমার পেটে ব্যথা রাত থেকে। বাইরের কোনো খাবার আমি খাইনি, তবুও আজকে ভোর থেকে আমার পেটে ব্যথা। তারপর এসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।

শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. হেলাল উদ্দিন বলেন, আজকে সকাল পর্যন্ত ২২ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ঈদের পর ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি ছিল। সর্বোচ্চ ৫০ জন রোগী ভর্তি ছিল। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের  চিকিৎসাসেবার জন্য সার্বক্ষণিক ডাক্তার-নার্স নিযুক্ত করা আছে। হাসপাতালে আপাতত সেলাইন-মেডিসিনের ঘাটতি নেই। ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব এখনো তেমনভাবে দেখা দেয়নি। ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে আছে।

কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, পুরো  কিশোরগঞ্জ জেলায় প্রতিদিন ডায়রিয়ার ৮০-৮৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে কলেরা স্যালাইন, খাবার স্যালাইন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ওষুধ সামগ্রী মজুত আছে। আমরা সাধ্যমতো ডায়রিয়ার রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছি। নিয়মিত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে  যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ওষুধ মজুত রাখছি।

আরএআর