দেশের একমাত্র মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামার বাগেরহাটের ফকিরহাটে অবস্থিত। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ভারত থেকে প্রথম চালানের ৩২টি মহিষ আনা হয়। তবে ঠিকাদারের পক্ষ থেকে মহিষ সরবরাহের ৫ মাসেও গ্রহণ করেনি খামার কর্তৃপক্ষ। খামারের একাধিক সূত্র বলছে, দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী দুধ উৎপাদন না হওয়ায় খামার কর্তৃপক্ষ এখনও মহিষগুলো গ্রহণ করেনি।

কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, মহিষ উন্নয়ন প্রকল্পের (২য় পর্যায়) আওতায় ভারত থেকে মুররা জাতের ১৪৯টি মহিষ আনার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জেনটেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডকে ক্রয়োদেশ প্রদান করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। ফেব্রুয়ারি মাসে আনা ৩২টি মহিষের মধ্যে ২৯টি মহিষের সঙ্গে বাচ্চা ছিল। প্রতিটি মহিষের প্রতিদিন গড়ে ৬ থেকে ৭.৪ কেজি দুধ দেওয়ার কথা থাকলেও দুধ হচ্ছে ৩ থেকে ৩.২ কেজি। বর্তমানে কেন্দ্রের ৪ ও ৭ নং শেডে মহিষগুলো রয়েছে। পর্যায়ক্রমে চলতি অর্থ বছরের মধ্যে বাকি ১২৭টি মহিষ কেন্দ্রে আসবে বলে জানা গেছে। তবে কেন এই মহিষ গ্রহণ করা হয়নি সেই বিষয়টি স্পষ্ট করেনি কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে কেন্দ্রে সব মিলিয়ে ৩৭২টি মহিষ রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ১৯০ থেকে ২০০ লিটার দুধ উৎপাদন হচ্ছে।

মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারের সিনিয়র সহকারী পরিচালক ও মহিষ ক্রয় কমিটির সদস্য সচিব মো. আহসান হাবীব প্রামাণিক বলেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ভারত থেকে আনা মহিষগুলো টেন্ডারের চুক্তি অনুযায়ী কেন্দ্রের দুটি শেডে রয়েছে। তবে পর্যালোচনা কমিটি মহিষ গ্রহণ করা বা না করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (উৎপাদন) এবং মহিষ ক্রয় কমিটির আহ্বায়ক ড. এ.বি.এম খালেদুজ্জামান বলেন, যে মহিষগুলো এসেছে তাদের জ্বীনগত বৈশিষ্ট্য, দৈহিক গড়ন ও গঠন ঠিক আছে। যেহেতু তারা দীর্ঘ ভ্রমণ ও অন্য একটি পরিবেশ থেকে এসেছে, এ কারণে আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। বিশেষ করে তাদের উৎপাদন ক্ষমতা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। খুব শিগগিরই মহিষগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে কেন্দ্র থেকে সরবরাহকৃত সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সঙ্গে কয়েক দিন ধরে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

দেশীয় মহিষের জাত উন্নয়ন ও পালন বৃদ্ধির জন্য ১৯৮৪-৮৫ সালে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার শ্যামবাগাত নামকস্থানে ৯৫ একর জমির ওপর দেশের একমাত্র মহিষ প্রজনন ‍ও উন্নয়ন  কেন্দ্রের যাত্রা শুরু হয়। মহিষের বংশবৃদ্ধি, মাংস ও দুধের ঘাটতি পূরণে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। এখানে উৎপাদিত মহিষ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সময় কৃষকদের কাছে সরবরাহ করা হয়েছে। নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া ও সরকার নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ করে পালনের জন্য এখান থেকে মহিষের বাচ্চা ক্রয় করার সুযোগও রয়েছে কৃষকদের।

এমএএস