শিক্ষার্থীদের এমপির সমাবেশে যেতে বাধ্য করলেন প্রধান শিক্ষক
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে স্থানীয় সংসদ-সদস্য (এমপি) ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জের অনুসারী আওয়ামী লীগ নেতাদের ডাকা শান্তি সমাবেশে জোর করে স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির নেতৃত্বে মিছিল সহকারে শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
দলীয় সভায় স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। এ সময় প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের চৌরঙ্গী কলেজ মাঠে এমপি সেলিম আলতাফ জর্জ অনুসারী আওয়ামী লীগ নেতারা শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের আয়োজন করে। সেই সমাবেশে চৌরঙ্গী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম মিলন ও সভাপতি মাহফুজুর রহমানসহ শিক্ষকদের নেতৃত্বে ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেয়। এ সময় গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ সংক্রান্ত একাধিক ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে বড় মিছিল নিয়ে আসতে দেখা গেছে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিসহ অন্য শিক্ষকদের।
এতে দেখা যায়, মাঝখানে থেকে মিছিলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধান শিক্ষক। বাম পাশে সভাপতিসহ অন্য একজন। এতে আরও দেখা যায় মিছিলের সামনে একটি নৌকা, আর সেটি ঠেলে আনছেন শিক্ষার্থীরা। আর বাদ্য বাজাচ্ছে স্কুলের ব্যান্ডদল।
বিজ্ঞাপন
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চৌরঙ্গী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, স্কুল ছিল বিকাল ৪টা পর্যন্ত। এমপির সমাবেশে যাওয়ার জন্য কড়া নির্দেশ ছিল স্যারদের। এজন্য ছুটির পর যাতে কেউ চলে যেতে না পেরে সেজন্য তাদের বই ও ব্যাগ জোর করে রেখে দেওয়া হয়। এরপর বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম মিলন ও সভাপতি মাহফুজুর রহমান মিছিলসহ তাদের সমাবেশে নিয়ে যায়।
অভিভাবকরা বলেন, স্কুল ছুটি হলেও শিক্ষার্থীদের ব্যাগ রেখে দেওয়া হয়। সমাবেশে না গেলে শাস্তি দেওয়ার ভয় দেখানো হয়। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করার সাহস নেই কারও।
তবে স্কুলের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম মিলনের মোবাইল ফোনে জানান, তিনি শিক্ষার্থীদের কোনো মিছিল নিয়ে সমাবেশে নিয়ে যাওয়া হয়নি। পরে উত্তেজিত হয়ে তিনি ফোনের লাইন কেটে দেন।
স্কুলের পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি মাহফুজুর রহমান বলেন, আমি সমাবেশে ছিলাম না। তবে অল্প কিছু ছেলেমেয়ে সমাবেশে গিয়েছিল। তারা বেশি সময় ছিল না।
কুমারখালী উপজেলা শিক্ষা অফিসার এজাজ কায়সার বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ আমাকে জানায়নি।
রাজু আহমেদ/আরকে