মাঠে মাঠে দুলছে সোনালি ধান
দক্ষিণ সমুদ্র উপকূলের মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে সোনালি ধান
‘ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা, আমাদের এই বসুন্ধরা’ কথাটির স্বার্থকতা মিলেছে উপকূলের মাঠে। দেশের দক্ষিণ সমুদ্র উপকূলের বাতাসে দুলছে সোনালি ধানের শীষ। বোরো ধানের বাম্পার ফলন দেখে কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খেতজুড়ে উঁকি দিচ্ছে সোনালি ধানের শীষ। ফসল ঘরে তোলার আশায় প্রতিটি কৃষক পরিবারের চোখে মুখে সোনালি স্বপ্নের ছাপ। রোপা বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় কৃষকরা বেশ খুশি। কদিন পরেই সোনালি ধান কাটা শুরু করবে। কৃষক-কৃষাণীরা মনের আনন্দে ফসল ঘরে তুলবেন।
বিজ্ঞাপন
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, কলাপাড়া উপজেলার ৪৯ হাজার ২১০ হেক্টর জমির মধ্যে কৃষি জমি ৪০ হাজার ৯৪০ হেক্টর। এ বছর ৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। এ উপজেলার প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনোভাবে কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত। চলতি বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন ও ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন চাষিরা।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ধুসর বিলের ফাঁকে ফাঁকে সবুজের বিপ্লব ঘটেছে। ধান গাছের বুক চিরে বেরিয়েছে কৃষকের স্বপ্ন। প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষকরা খেতের ধান কাটার অপেক্ষায় রয়েছেন। বাতাসে সোনালি ধানের শিষ দুলছে। অনেক কৃষক আবার বেশি ধান পাওয়ার আশায় জমিতে রাসায়নিক ও জৈব সার প্রয়োগ করছেন। কেউ আবার খেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন। তবে কখন নতুন ধান ঘরে তুলবেন এ স্বপ্নে বিভোর উপকূলের কৃষকরা।
বিজ্ঞাপন
কৃষি বিভাগ বলছে, বোরো আবাদে কৃষকদের আদর্শ চারা উৎপাদন ও জমিতে পারচিংসহ (ডাল পোতা) সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। তবে সার ও কীটনাশকের দাম কমানোর দাবি করেছেন চাষিরা। কোনো ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন আশা করছেন চাষিরা।
কৃষকদের দাবি, যেসব খাল ভরাট ও দখল হয়ে গেছে সেগুলো উদ্ধার করে খনন করলে পানির সমস্যার সমাধান হবে। অনেক জায়গায় পানির কারণে বোরোর চারা রোদে পুড়ে মারা গেছে। অনেক কৃষকের বোরো ধানের শীষ বের হচ্ছে না। জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে।
লতাচাপলী ইউনিয়নে আছালতপাড়া গ্রামের কৃষক আ. সালাম প্যাদা বলেন, আমন ধানের ভালো দাম পেয়েছি। আর সে কারণেই বোরো ধান চাষ করছি। আশা করি বাজারে ধানের ভালো দাম পাওয়া যাবে। কিন্তু কৃষি অফিস থেকে কৃষকের সরকারি বরাদ্ধকৃত সার, বীজ প্রত্যক্ষ কৃষকরা পান না। রাজনৈতিক ছত্রছায়া যারা আছে তাদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
তুলাতলী এলাকার কৃষক বশির উদ্দিন আকন আক্ষেপ করে বলেন, সময়মতো কৃষি অফিসের লোককে খুঁজে পাওয়া যায় না। তারা কোনো কৃষকের খোঁজ রাখেন না।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকতা আবদুল মান্নান বলেন, আমন ধানের ভালো দাম পেয়ে কৃষকেরা এ বছর ব্যাপকভাবে বোরো চাষ করেছে। এখন বৃষ্টি হলে কৃষকের পানির সমস্যা দূর হয়ে যেত। বোরো ধানের গাছের অবস্থা খুবই ভাল আছে। আমরা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সাধ্যমতো পরামর্শ দিচ্ছি।
এসপি