খুলনায় নারী ফুটবলারদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে চার নারী ফুটবলার আহত হয়েছেন। শনিবার খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার তেঁতুলতলা গ্রামে হামলার শিকার হন তারা। 

এ হামলার ঘটনায় নুর আলম নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। তিনি স্থানীয় তেতুলতলা এলাকার আজিজের ছেলে।

ভুক্তভোগীদের মধ্যে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার তেঁতুলতলা গ্রামের মেয়ে সাদিয়া নাসরিন স্থানীয় ‘সুপার কুইন ফুটবল একাডেমি’ নামের একটি একাডেমিতে প্র্যাকটিস করেন। তিনি খুলনার অনূর্ধ্ব-১৭ দলের একজন ফুটবলার। 

সাদিয়া নাসরিন অভিযোগ করেন, গত বৃহস্পতিবার একাডেমিতে প্র্যাকটিস করার সময়ে নুপুর খাতুন নামে একটি মেয়ে আমার ছবি তোলে। পরে আমার বাড়িতে বাবা-মাকে দেখিয়ে বিভিন্ন ধরনের আজেবাজে মন্তব্য করে আসেন। 
শনিবার বিকেলে তার কাছে আমি বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞেস করলে, তিনি অকথ্য ভাষায় আমাকে গালিগালাজ করতে থাকেন। আমি এর প্রতিবাদ করলে তিনি এলোপাতাড়িভাবে আমাকে কিল, চড়, ঘুষি মেরে মুখ ও বুকের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। এরপর আমি ঘটনার বিষয়টি বাড়িতে গিয়ে আমার বাবা-মা এবং আমার ক্লাবের কোচ মুস্তাকুজ্জামান মুস্তাকসহ অন্যান্য খেলোয়াড়দের জানাই। তারা আমাকে সাথে নিয়ে সন্ধ্যা ৭ টার দিকে নুপুর খাতুনদের বাড়িতে যায়। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওই বাড়ির আলাউদ্দিন, সালাউদ্দিন, নুর আলম, রঞ্জি বেগম ও মনোয়ারা বেগম মিলে আমাদের উপর হামলা করে।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় আমার বান্ধবী মঙ্গলী বাগচী, হাজেরা খাতুন ও জুই মন্ডল আহত হন। তারা লোহার রড দিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালান ও চাইনিজ কুড়াল নিয়ে এসে হত্যার হুমকি দেন বলে দাবি করেন তিনি।

আহত মঙ্গলী বাগচী বলেন, তারা আমাকে আহত করে প্রায় দুই ঘণ্টা হাত বেঁধে আটকে রেখেছিল। তখন আমি অজ্ঞান ছিলাম। জ্ঞান আসলে দেখি চেয়ারের সাথে আমার হাত বাধা। জ্ঞান ফিরলে হামলাকারীরা বলেন, মেয়ে মানুষ হয়ে হাফপ্যান্ট পরে ফুটবল খেললে গ্রাম থেকে বের করে দেবো। পরে স্থানীয় ক্লাবের মেম্বররা আমাকে উদ্ধার করে বটিয়াঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান বলেন, একজন মেয়ের মাথায় ক্ষত হয়েছে। সেটা তেমন গুরুতর কোনো আঘাত না। বাকিরাও আশঙ্কামুক্ত।

বটিয়াঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত কবীর বলেন, ঘটনা শোনার পর পরই পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। এছাড়া নূর আলম নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। 

মোহাম্মদ মিলন/এনএফ