পরিবারের সঙ্গে ট্রেনে ঢাকা যাওয়ার সময় দরজায় ঝুলে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করছিল ইমজামুল হক (১৭)। এসময় রেললাইনের পাশে থাকা সিগন্যালের খুঁটিতে ধাক্কা লেগে ট্রেন থেকে নিচে পড়ে ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় তার। 

মঙ্গলবার (১ আগস্ট) বিকেলে চলন্ত পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পূর্বপাশে রেলওয়ের সিগন্যাল খুটির সঙ্গে ধাক্কা লেগে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মৃত ইমজামুল চুয়াডাঙ্গা জেলার কুতুবপুরের জামুরহুদা গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে। সে কুতুবপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নিহত ইমজামুলের বাবা মিজানুর রহমানের ঢাকায় চুলের ব্যবসা রয়েছে। সেই ব্যবসার সুবাধে পরিবারসহ ঢাকায় থাকেন তারা। সম্প্রতি এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট পাবলিশ হওয়ার আগে ঢাকা থেকে বাড়িতে আসছিলেন পরিবারসহ। ফলাফল প্রকাশ হওয়ার ৪ দিন পর আজকে মা-বাবা, ভাই-বোনসহ আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে ঢাকা যাওয়ার জন্য চুয়াডাঙ্গা স্টেশন থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে ওঠে ইমজামুল।

ট্রেনটি ঈশ্বরদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পার হওয়ার পর সে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে মাথা বের করে দেয়। এসময় অসাবধানতাবশত ট্রেনের সিগন্যাল পোলের সঙ্গে ধাক্কা লেগে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি রেলওয়ে পুলিশকে জানালে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

নিহত ইমজামুলের বাবা মিজানুর রহমান বলেন, ঢাকাতে ব্যবসা করে ছেলে-মেয়েদের পড়াশুনা করাচ্ছি। ছেলে এবার এসএসসিতে ভালো ফলাফল অর্জন করায় ঢাকাতে কোনো ভালো কলেজে ভর্তি করাব বলে আশা করেছিলাম। আজকে চোখের সামনে ছেলে হারিয়ে শেষ হয়ে গেলাম। কোনোভাবেই বিষয়টি মেনে নিতে পারছি না।

ঈশ্বরদী রেলওয়ে (জিআরপি) থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) হারুনুজ্জামান রুমেল ঢাকা পোস্টকে জানান, নিহত কিশোর এবার মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। হঠাৎ পাকশী থেকে এমন দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মরদেহটি হস্তান্তর করা হয়। পরিবারের সবাই ঢাকা না গিয়ে মরদেহ নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় ফিরে গেছেন।

রাকিব হাসনাত/আরকে