গত দুই দিনের টানা বর্ষণের কারণে পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে পাহাড় ধসের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। পাহাড় ধসে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পাহাড়ের ঢালে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরতদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে।

পাশাপাশি শহরের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান। শুক্রবার (৪ আগস্ট) রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা শহরের শিমুলতলী, লোকনাথ মন্দির, রুপনগর, ভেদভেদী মুসলিম পাড়াসহ বেশ কিছু এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে বসবাসরতদের মাইকিং করে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে আহ্বান জানানো হয়। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এসএম ফেরদৌস ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ হাসানসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরতদের জন্য রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহরের ৯টি ওয়ার্ডে মোট ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে একটি কন্ট্রোলরুম (নিয়ন্ত্রণ কক্ষ) খোলা হয়েছে। কিন্তু পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের মধ্যে এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার তেমন আগ্রহ দেখা যায়নি।

শহরের রুপনগর এলাকার বাসিন্দা মো. আবদুল সোবাহান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখনো তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে যাইনি। তবে বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়লে আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাব।

শিমুলতলী এলাকার বাসিন্দা রুপনা চাকমা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের বাসার ছোট বাচ্চাদের আত্মীয়ের বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছি। আরও বেশি বৃষ্টি শুরু হলে আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাব।

শিমুলতলী সমাজ উন্নয়ন কমিটির সভাপতি মো. আবু বক্কর লিটন (মিঠু) ঢাকা পোস্টকে বলেন, যেহেতু প্রতি বছর বৃষ্টিপাতের সময় শিমুলতলী এলাকায় পাহাড় ধসের আশঙ্কা তৈরি হয়, তাই আমরা সবাই সতর্ক রয়েছি। আমি শিমুলতলী এলাকার বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে অনুরোধ করেছি। কিন্তু যেহেতু এখনো তেমন বৃষ্টি হয়নি তাই কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চাইছে না। তবে অনেকেই আত্মীয়স্বজনের বাসায় চলে গেছে। বৃষ্টি শুরু হলে হয়ত আরও অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাবে।

রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান জানান, যেহেতু গত দুই দিন যাবত টানা বর্ষণ হচ্ছে তাই অনেক জায়গায় পাহাড় ধসের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। আমরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছি, আবার বের হব। এসব এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা ও মাইকিং করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্র ও কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। আমরা চাই না কারও কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হোক।

রাঙামাটি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাঙামাটিতে ৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

মিশু মল্লিক/এমজেইউ