চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে পাথর আমদানি আট দিন বন্ধ থাকার পর আবারও শুরু হয়েছে। অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু ১৩ ডলার থেকে বাড়িয়ে ১৫ ডলার করার প্রতিবাদে পাথর আমদানি বন্ধ করে দিয়েছিলেন আমদানিকারকরা। 

বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) সকাল থেকে ভারতের মহদীপুর স্থলবন্দর দিয়ে পাথরভর্তি ভারতীয় ট্রাক প্রবেশ করে। গত ৮ দিন যাবৎ পাথর আমদানি বন্ধ থাকায় স্থবির হয়ে পড়ে এই স্থলবন্দর।

বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানায়, সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে দৈনিক ৩০০ থেকে ৩৫০ ট্রাক পণ্য আসে ভারতীয় ট্রাকে। এরমধ্যে ২০০ থেকে ২৫০ ট্রাক পণ্যই পাথর। প্রতি টন পাথরের আমদানিমূল্য ১৩ ডলার অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু ধরে শুল্ক আদায় করা হতো, সম্প্রতি হঠাৎ করেই তা বাড়িয়ে ১৫ ডলার করা হয়। এর প্রতিবাদে গত ২ আগস্ট থেকে অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু আগের ১৩ ডলার করার দাবিতে পাথর আমদানি বন্ধ করে আমদানিকারকরা। আমদানি বন্ধ থাকায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হন আমদানিকারক ও শ্রমিকরা। 

গত বুধবার বিকেলে সোনামসজিদ স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপ জরুরি সভা আহ্বান করে। এ সভায় ১৫ ডলার অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালুতেই পাথর আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। পাথর আমদানিকারক তরিকুল ইসলাম জানান, এমনিতেই ডলার সংকট, তার উপর প্রতি টন পাথরে দুই ডলার অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। যার ফলে তা কমানোর দাবিতে আমরা গত ৮ দিন আমদানি বন্ধ রাখি। আমদানি বন্ধ রেখে উলটো আমাদের আরও বেশি ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে পড়তে হয়েছে।

আমদানিকারক এরশাদ আলী বলেন, দেশে সবচেয়ে বেশি পাথর আমদানি হয় সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে। কিন্তু গত ৮ দিন ধরে আমদানি বন্ধ থাকায় আমাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমাদের দাবি, সরকার এই সিদ্ধান্তটি বিবেচনা করে দেখবে। 

শ্রমিক মোজাহার আলী জানান, এক সপ্তাহ ধরে আমদানি বন্ধ থাকায় কাজ ছিল না। অলস বসে সময় পার করছিলাম। পাথর আমদানি চালু হওয়াতে আবারো কাজ শুরু হয়েছে। 

সোনামসজিদ স্থলবন্দর পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের পোর্ট ম্যানেজার মো. মাইনুল ইসলাম জানান, এই স্থলবন্দর দিয়ে আসা সিংহভাগ পণ্যই পাথর।  পাথর আমদানি বন্ধ থাকায় বন্দরে ধীরগতি দেখা যায়। তবে আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আবারও পাথর আমদানি শুরু হয়েছে৷ 

গত ৮ দিনে পাথর আমদানি বন্ধ থাকলেও পেঁয়াজসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান, সোনামসজিদ স্থলবন্দর কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. ইউনুস আলী। তিনি বলেন, আমদানিকারকরা তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার ফলে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পাথর আমদানি শুরু হয়েছে। তবে দীর্ঘ সময় ধরে পাথর আমদানি বন্ধ থাকলে রাজস্ব আদায়ে বিরূপ প্রভাব পড়বে। 

উল্লেখ্য, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪১৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৩৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা। বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৬১৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা।

মো. জাহাঙ্গীর আলম/এএএ