তুর্কি প্রেসিডেন্টকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ব্যানার টানিয়েছেন রিকশাচালক দ্বীন ইসলাম

এবার স্বপ্নে পাওয়া নির্দেশে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে ফের আলোচনায় কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার বড় আজলদীর গ্রামের রিকশাচালক মো. দ্বীন ইসলাম। তিনি এই অভিনন্দন জানানোর বিষয়টি নাকি স্বপ্নে নির্দেশ পেয়েছেন।  

শুক্রবার (০২ এপ্রিল) কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার বড় আজলদীর কান্দা এলাকায় মো. দ্বীন ইসলামের নিজের প্রতিষ্ঠিত মীনা মসজিদের বাহিরে ব্যানার টানিয়ে এ অভিনন্দন জানানো হয়। জুমার নামাজের পর দ্বীন ইসলামের পক্ষ থেকে এ উপলক্ষে মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলেরও আয়োজন করা হয়। এ সময় উপস্থিত মুসল্লিদের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করেন তিনি।

৮৬ বছর পর তুরস্কের প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী আয়া সোফিয়া মসজিদ নামাজ আদায়ের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ায় এরদোয়ানকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান দ্বীন ইসলাম। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দ্বীন ইসলাম পেশায় একজন রিকশাচালক। ২০০৪ সালে বিয়ে করেন তিনি। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তার ছোট্ট পরিবার। ছেলের বয়স ৯ বছর এবং মেয়ের বয়স ১৪ বছর। টানাপোড়নের সংসারেও সামাজিক বিভিন্ন কাজে সব সময় সংযুক্ত থাকেন দ্বীন ইসলাম।

এর আগে গত ২১ মার্চ ৪০ কেজি ফুল দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল সাজিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন রিকশাচালক দ্বীন ইসলাম। সে সময় স্বপ্নে বঙ্গবন্ধুকে দেওয়া কথা রাখতে রিকশা চালিয়ে উপার্জন করা ১০ হাজার টাকায় ৪০ কেজি ফুল কিনে ম্যুরাল সাজান তিনি। 

দ্বীন ইসলাম জানান, ২০১৭ সালে প্রথম বঙ্গবন্ধুকে স্বপ্নে দেখেন তিনি। সেসময় বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ পালনে কক্সবাজার ও গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ভ্রমণে যান তিনি। ওই সময় স্বপ্নে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে টুঙ্গিপাড়ায় তার কবর জিয়ারত করতে এবং দুটি সাদা পায়রা ওড়াতে যান তিনি। তখন কবর  জিয়ারত ও পায়রা ওড়াতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে স্বপ্নের ঘটনা খুলে বললে কবর জিয়ারত ও পায়রা ওড়াতে দেয় পুলিশ। পায়রা উড়িয়ে কবরস্থান সংলগ্ন মসজিদে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে বঙ্গবন্ধুর জন্য দোয়া করে বাসায় চলে আসেন তিনি।

দ্বীন ইসলামের দাবি- স্বপ্নে নির্দেশনা পেয়েই তিনি এসব কাজ করেছেন। স্বপ্নে আদেশ পেয়ে ২০১৭ সালে মীনা মসজিদ ও ২০১২ সালে ধর্মীয় শিক্ষার অগ্রগতির জন্য নিজ গ্রামে একটি মাদরাসা নির্মাণ করেছেন। যার নাম দিয়েছেন ইউনূস পাগল ফুরকানিয়া মাদরাসা।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. রিয়াজ উদ্দিন মাস্টার বলেন, তার এই ভালো উদ্যোগকে আমরা সব সময় স্বাগত জানাই। এলাকার মানুষ তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে।

স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, আমরা এই মসজিদে নামাজ আদায় করি। মসজিদটি বড় করার জন্য এলাকাবাসী সবাই চেষ্টা করে যাচ্ছি। সকলের সহযোগিতা পেলে দ্রুতই মসজিদটি বড় করা সম্ভব হবে।

দ্বীন ইসলামের প্রতিষ্ঠিতি মীনা মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, দ্বীন ইসলাম মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করার পর থেকেই আমি বিনা বেতনে এ মসজিদে ইমামতি করছি। 

এসকে রাসেল/আরএআর