ইউপি সদস্য সবুজ মিয়া

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় চুরির অপবাদ দিয়ে এক কিশোরকে গ্রাম্য সালিশে বেত্রাঘাত, মাথা ন্যাড়া ও জরিমানা করার ঘটনায় ইউপি সদস্যসহ দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন নির্যাতনের শিকার কিশোরের মা। এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আটক দুজনকে শনিবার (১২ আগস্ট) দুপুরে নেত্রকোণা আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এবং সরাপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল ওয়াহেদের ছেলে সবুজ মিয়া (৫৫) ও একই গ্রামের মৃত আখের উদ্দিনের ছেলে স্থানীয় মাতব্বর আবু তাহের (৬৫)। 

এর আগে গত সোমবার (৭ আগস্ট) রাত ৯টা থেকে পরদিন মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সকাল ১১টার মধ্যে উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের সরাপাড়া বাজারে ওই কিশোরের ওপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। 

কেন্দুয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী হোসেন বলেন, ঘটনাটি জানার পর শুক্রবার বিকেলে ইউপি সদস্যসহ দুজনকে আটক করা হয়। পরে ওইদিন রাতেই নির্যাতনের শিকার কিশোরের মা বাদী হয়ে থানায় মামলা করলে আটকদের ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ আগস্ট রাত সোয়া ৮টার দিকে ওই কিশোরকে তার মা মোবাইলে টাকা রিচার্জের জন্য স্থানীয় সরাপাড়া বাজারে পাঠান। সে টাকা রিচার্জ করে বাড়ি ফেরার পথে বাজারের চা দোকানি মতিউর রহমান বিশ্বাস চোর বলে তাকে ধরে বাজারের ব্যবসায়ী কামাল মিয়ার দোকানে নিয়ে যান। একপর্যায়ে মতিউর রহমান বিশ্বাস, আবু তাহের, সবুজ মিয়া, কামাল মিয়া, হাদিস মিয়া ও ফেরদৌস মিয়াসহ বেশ কয়েকজন মিলে ওই কিশোরকে বেধড়ক মারধর করে রাতভর আটকে রাখেন।

পরদিন সকাল ৯টার দিকে ইউপি সদস্য সবুজ মিয়ার নেতৃত্বে বাজারে সালিশ বসে। সালিশে ওই কিশোরকে বেত্রাঘাত করে নাপিত দিয়ে মাথা ন্যাড়া করানো হয় এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরে পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে বাজারে ছুটে গিয়ে ওই কিশোরকে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাকে উদ্ধার করে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।  

জিয়াউর রহমান/আরএআর