আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা বলেছেন, দেশের উন্নয়নের স্বার্থে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, মুখে নয় অন্তরে। তৃণমূলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ দলকে ভালোবেসে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী করেছেন। দেশের ধারাবাহিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আপনারা আবারও সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে নৌকাকে জয়যুক্ত করবেন, এটা আমার আহ্বান

মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে নড়াইলের লোহাগড়া পাইলট স্কুল মাঠ প্রাঙ্গণে উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে জাতীয় শোক দিবস ও বঙ্গবন্ধুর ৪৮তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে শোক র‍্যালি পরবর্তী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাশরাফি এসব বলেন।

তিনি আরও বলেন, শোককে শক্তিতে রূপান্তর করলে দাঁড়ায় দেশের উন্নয়ন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে শুধু হত্যা করেনি, হত্যা করেছিল দেশের গণতন্ত্রকেও। বিদেশে থাকায় সেদিন প্রাণে বেঁচেছিল বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা আপা। আপা (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) পরিবারের শোককে শক্তিতে রূপান্তর করেছিলেন বলেই বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে আপনাদেরকে নিয়েই ১৯৯৬-এ সরকার গঠন করতে পেরেছিলেন। ২০০১-০৭ পর্যন্ত বিরতির পর আপনারাই (জনগণ) বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনেছেন।

মাশরাফি বিন মুর্তজা বলেন, এই আগস্টে প্রধানমন্ত্রী পরিবারের সকলকে হারালেন। ক্ষমতায় থেকে তিনি যা কিছু করছেন সবই আপনাদের জন্য করছেন। আপনাদের টাকায় পদ্মা সেতু হয়েছে, কিন্তু শেখ হাসিনার আগে দেশের টাকা দিয়ে কেউ করতে পারেননি কেন? কারণ যে সাহস একমাত্র শেখ হাসিনা দেখাতে পারেন তা অন্যদের কল্পনায়ও আসে না। দেশে বিভিন্ন মেগা প্রজেক্ট চলছে, যা সম্পন্ন হলে দেশের চিত্র পাল্টে যাবে। নড়াইলে ছয় লেন, চার লেন সড়ক, মধুমতি সেতু, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, আইটি পার্ক, বিভিন্ন ভাতা যা কিছু পাচ্ছেন তা শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টির কারণেই। আমাদের অবহেলিত নড়াইলের চিত্র পাল্টাতে আপনাদের বেশি দিন অপেক্ষা করতে হবে না।

তিনি আরও বলেন, এই প্রচণ্ড গরমের মধ্যে আপনারা শোক র‍্যালিটি সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন, এখন আবার এই গরমে আলোচনা শুনছেন। আপনাদের মধ্যে সবাই আওয়ামী লীগ করেন ব্যাপারটা এমন না, নির্দলীয় লোকও আছেন। দলীয় নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিরা আপনাদের সবার উচিত প্রধানমন্ত্রী জনগণের জন্য কী কী উন্নয়ন করছেন তা সবার কাছে জানানো। আপনাদের সবার চেয়ে রাজনীতিতে আমি শিশু। দলীয় মনোনয়নে আপনারাই আমাকে নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছেন। আপনাদের জন্য আমি সবকিছু হয়ত করতে পারিনি, তবে এইটুকু বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি গ্রুপিংয়ের ঊর্ধ্বে গিয়ে আপনাদের সকলকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছি। কখনো নেতাকর্মীদের অসম্মানিত করিনি। নড়াইলের মানুষের ভাগ্যন্নোয়নে যা কিছু পেয়েছেন সব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আমি শুধু তার প্রতিনিধি হিসেবে আপনাদের পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছি।

মাশরাফি বলেন, আমি বিগত সাড়ে চার বছর ধরে জনপ্রতিনিধি হিসেবে আপনাদের কাছে পরীক্ষা দিচ্ছি, আবারও পরীক্ষা দিতে আমি প্রস্তুত। আমি পরীক্ষায় ভয় পাই না। আপনারা গ্রুপিং বাদ দিয়ে সকল বিভেদ ভুলে প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করুন, এখানে আমি কিছু না। আমাদের সকলের প্রধান উদ্দেশ্য শেখ হাসিনার নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা। সামনে নির্বাচন, আমরা দেশের স্বার্থে নিজেদের সর্বোচ্চ উজাড় করে এক হয়ে নৌকার জন্য কাজ করে বিজয়ী করবো ইনশাআল্লাহ।

তিনি আরও বলেন, আপনারা ব্যক্তিস্বার্থের কারণে সকলে একপাশে গেলেও আমি কিন্তু আপার (শেখ হাসিনা) পক্ষেই থাকব, এটা মনে রাইখেন। এটা-ওটা করে আমাকে কিন্তু নড়াতে পারবেন না। আমি নেতা মানি একজনকেই, তিনি আর কেউ নন শেখ হাসিনা। নৌকার মনোনয়ন যেই পাক আমি তার জন্য কাজ করবো। আপনারা বারবার প্রমাণ করেছেন নড়াইল-২ আসন শেখ হাসিনার। আর একবার প্রমাণ করার সময় এসেছে, এই আসনে নৌকাকে বিজয়ী করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবো।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুন্সি আলাউদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এবং পৌর মেয়র সৈয়দ মসিয়ূর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলার চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন খান নিলু।

সজিব রহমান/এমজেইউ