পঞ্চগড়ের বোদায় এক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসের পর মাস অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলছেন। উপজেলার চৌরঙ্গী হাট দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীনবন্ধু দেবনাথের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ জানিয়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। 

প্রধান শিক্ষকের মাসের পর মাস অনুপস্থিতির কারণে বিদ্যালয়টিতে নিয়মিত পাঠদান হচ্ছে না। এতে করে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় চরম সংকটের মধ্যে পড়েছে।

জানা যায়, ১৯৯১ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই পড়ালেখার মান ভালো হওয়ায় বিভিন্ন এলাকা থেকে শিক্ষার্থীরা এ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। কিন্তু বর্তমানে প্রধান শিক্ষক মাসের পর মাস বিদ্যালয়ে উপস্থিত না থাকার কারণে ভেঙে পড়েছে পাঠদানের নিয়ম শৃঙ্খলা। দিন দিন বিদ্যালয়টির শিক্ষার মান নিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে স্থানীয়রা জানান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সহকারী শিক্ষক জানান, প্রধান শিক্ষক চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে মাসের পর মাস স্কুলে উপস্থিত না হয়েও নিয়মিত বেতনভাতা উত্তোলন করছেন। তার অনিয়মের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার অনেক ক্ষতি হচ্ছে। তার অনুপস্থিতির কারণে নির্ধারিত বিষয়র পাঠদান হয়নি।

তবে ওই স্কুলের কয়েকজন সহকারী শিক্ষকরা জানান, প্রধান শিক্ষক অসুস্থ। তাই তিনি অনেক দিন ধরে বিদ্যালয়ে আসেন না। কিন্তু কোনো সহকারী শিক্ষককে দায়িত্বও দেওয়া হয়নি। ছুটির জন্য আবেদন না করেই মাসের পর মাস বিদ্যালয়ে না এসেও মাস শেষে ঠিকই নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন।

স্থানীয় অভিভাবকরা নাম গোপন রাখার শর্তে জানান, প্রধান শিক্ষক কোনো দায়িত্বই পালন করেন না। বিদ্যালয়টি অপরিচ্ছন্ন হয়ে গেছে। প্রধান শিক্ষক স্কুলে না আসায় তদারকি নেই, তাই অন্যান্য শিক্ষকরাও ঠিক মতো দায়িত্ব পালন করছেন না।

বিষয়টি জানতে সাংবাদিকরা অনুপস্থিত স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বললে তিনি তড়িগড়ি করে স্কুলে ছুটে এসে জানান, আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় স্কুলে আসতে পারিনি। পরে তাড়াহুড়া করে ছুটির দরখাস্ত লিখেন। ছুটির দরখাস্ত না দিয়ে কিভাবে মাসের পর মাস স্কুলে না এসে বেতন-ভাতা তুলছেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি উত্তর না দিয়েই চলে যান।

বিষয়টির ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হামিজ উদ্দিনের সঙ্গে কথা বললে তিনি সাংবাদিকদের জানান, প্রধান শিক্ষক শারীরিকভাবে অসুস্থতার কথা শুনেছি। তবে তার ছুটির ব্যপারে কিছু জানি না। তিনি মাসের পর মাস স্কুলে আসেন না।

বোদা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পারভীন আক্তার বানু জানান, এমন ঘটনা জানা ছিল না। তদন্ত সাপেক্ষে অতি দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসকে দোয়েল/আরকে