ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ব্যবহার করে ঢাকার গুলিস্তান থেকে গাজীপুরের শ্রীপুরের জৈনা বাজার পর্যন্ত চলাচল করে ‘প্রভাতী বনশ্রী পরিবহন’। একদশকেরও বেশি সময় আগে এ পরিবহণ চালু হলেও সময়ের পরিক্রমায় এখন যাত্রী সেবার মান খুবই নিম্নমানের। বাসে মালামাল পরিবহণ, ভাঙাচোরা সিট, পুরাতন লক্কড়-ঝক্কড় গাড়ি রঙ করে প্রভাতী বনশ্রী পরিবহনের নামে মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এসব পরিবহণ নিয়ে সাধারণ মানুষের অভিযোগের শেষ নেই।

সিটিং সার্ভিসের নামে প্রতারণা, ভাঙাচোরা আসন, সক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন, অতিরিক্ত ভাড়া, যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা, মলম পার্টির দাপট, ই-টিকেটিং মেশিন ব্যবহার না করা, মালামাল পরিবহনসহ অভিযোগের অন্ত নেই প্রভাতী বনশ্রী পরিবহনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, এই পরিবহনের অধিকাংশ গাড়ির ফিটনেস না থাকার পরও অবৈধ সুবিধা নিয়ে এসব গাড়ি চলাচল করছে।

যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রভাতী বনশ্রী পরিবহনের যাত্রী সেবার মান খুবই নিম্নমানের। অধিকাংশ গাড়িই ঢাকা থেকে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের মালামাল পরিবহনের পাশাপাশি যাত্রীও পরিবহণ করে থাকে। এছাড়াও তেলের দাম বাড়ানোর অজুহাতে গ্যাস চালিত গাড়িও ভাড়া বাড়িয়েছে সমান হারেই। প্রতিটি গাড়িতে ভাড়ার তালিকা না থাকায় ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করেন তারা।

পরিবহণ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে তাদের এই পরিবহনে প্রায় ৬০টি গাড়ি চলাচল করে। স্থানীয় নেতাকর্মী ও পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এসব গাড়ির নিয়ন্ত্রণ করে ঢাকা পরিবহণ মালিক সমিতি।

ব্যাংক কর্মকর্তা মাজাহারুল ইসলাম জানান, অফিসের কাজে তাকে মাঝে মধ্যেই ঢাকার কাকরাইলে যেতে হয়। গত বৃহস্পতিবার তিনি এ পরিবহনের বাসে চড়েন। ৬০ কিলোমিটার জায়গা অতিক্রম করতে ৩০টি স্থানে স্টপেজ দিয়েছে। দুই ঘণ্টার সড়ক অতিক্রম করতে তার সময় লেগেছে সাড়ে ৪ ঘণ্টা। কিছু বললে যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে গাড়ির চালক ও সহকারীরা।

এ বিষয়ে ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক সামদানী খন্দকার বলেন, প্রভাতী বনশ্রী পরিবহনের যাত্রীসেবার মানের দিকে তারা নজর দিবেন। এখানে কোনো লক্কড়-ঝক্কড় গাড়ি যাতে না থাকে সে বিষয়েও উদ্যোগ নেবেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে গাজীপুর বিআরটির সহকারী পরিচালক আবু নাইম বলেন, যাত্রীসেবার মান খারাপের বিষয়টি তারা গুরুত্ব সহকারে দেখবেন। ফিটনেস বিহীন কোনো গাড়ি যাতে চলতে না পারে সে ব্যবস্থাও তারা নেবেন।

শিহাব খান/এএএ