ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ
‘কার কাছে বিচার চাইব, মামলা করি কী হইবে?’
রংপুরের আইডিয়াল জেনারেল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় মানিক চাঁদ (৫৫) নামের এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার মেয়ে সূর্য মণি (৩৫)।
নিহত মানিক চাঁদের বাড়ি গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ীর রামনগর গ্রামে। আর রংপুর শহরের আরকে রোডে ওই হাসপাতালটির অবস্থান।
বিজ্ঞাপন
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যায় ঘাড়ের টিউমারের অপারেশনের জন্য মানিক চাঁদকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় তার টিউমার অপারেশন শুরু হয়। এ সময় মানিকের জ্ঞান না থাকায় তাকে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক স্বজনদের জানান, রোগীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে।
মানিকের মেয়ে সূর্য মণি অভিযোগ করেন, দুপুর ২টায় তার বাবার টিউমারের অপারেশন করার কথা ছিল। কিন্তু তখন না করে সন্ধ্যায় অপারেশন করতে যাওয়ায় তার বাবার মৃত্যু হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বিচার চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সূর্য মণি বলেন, ‘কার কাছে বিচার চাইব? মামলা করি-বা কী হইবে। ওমার (ক্লিনিক মালিক) ম্যালাগুলো ট্যাকা। সবাকে কিনে নেবে। পরে বলবে, তোমার বাবা হার্ট অ্যাটাক করি মারা গেইচে। দেশোত কি গরিবের বিচার আছে?’
জানা গেছে, মানিক চাঁদের স্ত্রীর নাম চান মণি। তাদের তিন মেয়ে ও এক ছেলে। মেয়ে তিনটি বড়। সবার বিয়ে হয়েছে। বাবার মৃত্যু নিয়ে বিচার চাইতে দেখা যায় মেয়ে সূর্য মণিকেই। বাবার মৃত্যুর সংবাদ শুনে অপর দুই মেয়ে অনেক দূরে অবস্থিত তাদের স্বামীর বাড়ি থেকে রওনা দেন বলে জানা গেছে।
এদিকে সোমবার রাত ১২টার দিকে ওই ক্লিনিকে গিয়ে দেখা যায়, তখনও হাসপাতালের কেবিনের একটি বেডে মানিকের মরদেহ পড়ে আছে। পরে রাতেই স্বজনরা মরদেহ নিয়ে রওনা দেন।
রোগীর মৃত্যুর বিষয়ে ও রাত ১২টায় মরদেহ উদ্ধার না করার বিষয়ে জানতে চাইলে সেখানে উপস্থিত রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মজনু মিয়া বলেন, চিকিৎসকের হাতে রোগী মারা যেতেই পারে। এছাড়া চিকিৎসক বন্ডসই নিয়ে চিকিৎসা দেন। তা ছাড়া পরিবারের অভিযোগ না থাকলে মরদেহ কীভাবে উদ্ধার করবো।
এক প্রশ্নের জবাবে উপ-পরিদর্শক বলেন, যে চিকিৎসকের নাম বলা হয়েছে, আসলে সেই চিকিৎসকই চিকিৎসা দিয়েছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে হাসপাতালের পরিচালক মিনার বসুনিয়ার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমজেইউ