সোনাগাজীতে জলাবদ্ধতায় পানিবন্দি শতাধিক পরিবার

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চর মজলিশপুর ইউনিয়নের শাপলাসি খালের প্রায় দেড় কিলোমিটার জুড়ে বাঁধ ও অবৈধ দখল করায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন মজলিশপুর গ্রামের শতাধিক পরিবার। 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মজলিশপুর গ্রামটি নীচু আর আশপাশের এলাকা তুলনামূলকভাবে উঁচু। এজন্য ৩০ বছর আগে গ্রামের পানি নিষ্কাশনের জন্য ফেনী নদীর সঙ্গে সংযোগ করে একটি খাল খনন করা হয়। প্রায় ২০ বছর আগে মাছ শিকারের জন্য খালটিতে একটি ইটের বাঁধসহ আরও কয়েকটি বাঁধ দেওয়া শুরু হয়। এছাড়া খালের পাশের বাসিন্দারা বাঁধের পাশে ঘর-বাড়ি নির্মাণ করায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বৃষ্টি হলেই গ্রামের একটি অংশ এখন পানির নিচে তলিয়ে যায়। সাম্প্রতিক সময়ের বৃষ্টিতে আবারও পানিবন্দি রয়েছে জেলেপাড়ার শতাধিক পরিবার।

অনিক বণিক নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, প্রায় ২০ বছর ধরে বর্ষাকালে এমন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। কেউ এ সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেয় না। যারা খালে বাঁধ দেন, তাদের বেশিরভাগই প্রভাবশালী। এজন্য কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পান না। এমনকি তাদের নামও বলতে চান না।

জসিম উদ্দিন নামের একজন বলেন, জলাবদ্ধতায় পুকুরের মাছ ভেসে যাচ্ছে। এবার আমনের মৌসুম চলে যাচ্ছে। কিন্তু এখনো ধানের চারা রোপণ করতে পারিনি। রুহি চন্দ্র দাস নামে একজন বলেন, বাড়ি থেকে বের হতে হলে কোথাও হাঁটু পরিমাণ আবার কোথাও কোমর পানি ডিঙিয়ে বাজারে বা কাজে যেতে হয়। বর্ষা আমাদের জন্য অভিশাপের মত। জলাবদ্ধতার কারণে বর্ষা মৌসুমে বিয়েসহ অন্যান্য সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানও বন্ধ রাখতে হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এই গ্রামের স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা বই-খাতা ও জামা একটি ব্যাগে ভরে তা মাথায় নিয়ে মূল সড়কে উঠে। পরে সেখানে ভেজা কাপড় রেখে আবার জামা পরিধান করে স্কুলে যায়। বিকেলে ফেরার পথে একইভাবে বাড়ি যায়। কেউ অসুস্থ হলে তাকে কয়েকজন মিলে কাঁধে করে হাসপাতালে নিতে হয়।

এ প্রসঙ্গে স্থানীয় চর মজলিশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, জলাবদ্ধতার সমস্যাটি অবগত হয়ে শুক্রবার সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে শীঘ্রই খালের বাঁধ অপসারণ করে গাছপালা ও ঝোপঝাড় পরিষ্কার করে নদীতে পানি যাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। পরে গ্রামবাসীর চলাচলের রাস্তা সংস্কার করা হবে।

তারেক চৌধুরী/এএএ