নরসিংদীর রায়পুরায় যাত্রীবাহী ট্রলারের পাখায় লেগে সাহারা বেগম (৭৫) নামে এক বৃদ্ধার বাঁ হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সোমবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার চাঁনপুর ইউনিয়নের সদাগরকান্দি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

আহত সাহারা বেগম সদাগরকান্দি এলাকার মৃত আব্দুর রশিদ ওরফে রসু মিয়ার স্ত্রী। আহত হওয়ার পর স্বজন ও স্থানীয়রা বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থেকে রায়পুরার সদাগরকান্দি নৌ পথে আলেক মাঝি নামে এক নৌচালক ট্রলারে করে যাত্রীসহ মালামাল পারাপার করে থাকেন। সেই ট্রলারেরই যাত্রী ছিলেন বৃদ্ধা সাহারা বেগম। বিকালে অন্য যাত্রীদের সঙ্গে সদাগরকান্দি ঘাটে নামেন তিনি। এরপর পরনের বোরকাটি খুলে পাড়ে রেখে ট্রলারের পাখার কাছাকাছি দূরত্বে গোসল করছিলেন তিনি। এ সময় মাঝি তার দিকে খেয়াল না করেই ইঞ্জিন চালু করে দেন। এ সময় বৃদ্ধার শাড়ি ট্রলারের পাখার সঙ্গে পেঁচিয়ে বাঁ হাত কব্জির ওপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পাখার সঙ্গে লেগে যায়। সেই সময় ইঞ্জিনের শব্দে মাঝি বৃদ্ধার চিৎকার শুনতে পাননি। পরে ট্রলার নিয়ে চলে যান তিনি।

পরে স্থানীয়রা আহত বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে তার স্বজনদের খবর দেন। স্বজনরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাহারা বেগমকে ভর্তি করেন। বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

এদিকে এ ঘটনার পর ট্রলারের মাঝি আলেক মিয়াকে ফোন দেন স্থানীয়রা। পরে ঘটনাস্থল সদাগরকান্দি ঘাটে পৌঁছান তিনি। পরে সেদিন বিকেলই রায়পুরা থানা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মাসুদ ও চাঁনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোমেন সরকারের উপস্থিতিতে ট্রলারের পাখা থেকে বৃদ্ধার শাড়ি ও বিচ্ছিন্ন হওয়া বাঁ হাত উদ্ধার করা হয়।

এ ব্যাপারে ট্রলারের মাঝি আলেক মিয়া বলেন, ওনি ঘাটে গোসল করছিল। কখন যে ওনি পাখার কাছে চলে এসেছে সেটা আমরা দেখিনি। সম্ভবত ওনার শাড়ি ভেসে ট্রলারের পাখার কাছাকাছি চলে আসে। আমি ইঞ্জিন চালু করতেই হয়ত এ ঘটনা ঘটেছে।

আহত বৃদ্ধার নাতি ছগীর আহমেদ বলেন, আমার নানি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। দুর্ঘটনায় তার শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।

চাঁনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোমেন সরকার বলেন, ট্রলারের পাখার আঘাতে বৃদ্ধার বাঁ হাত বিচ্ছিন্ন এবং শরীরের অন্যান্য স্থানও থেঁতলে যায়। বৃদ্ধা সাহারাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ট্রলারটি আমার হেফাজতে আছে।

তন্ময় সাহা/এএএ