রমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এম এ গফুর

রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসাসেবা নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন সাবেক ফুটবলার ও ক্রীড়া সংগঠক এম এ গফুর। গত শুক্রবার (০২ এপ্রিল) শ্বাসকষ্ট নিয়ে তিনি রমেক হাসপাতালে তিনি ভর্তি হন। 

তার অভিযোগ, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে গত তিনদিনে তিনি সেখানে কোনো চিকিৎসাসেবা পাননি। অপরিষ্কার-নোংরা, দুর্গন্ধযুক্ত কেবিনে শুধুমাত্র অক্সিজেন দিয়ে তার চিকিৎসা চলছে। অনেক আকুতি মিনতির পরও কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেয়ে বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের অবগত করতে বাধ্য হয়েছেন।

রোববার (০৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় হাসপাতালের ‘এ’ ব্লকের চার তলার ১১ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন এম এ গফুর। 

সাবেক এই খেলোয়াড় দীর্ঘদিন রংপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন। বর্তমানে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) রংপুর বিভাগীয় ডিলার সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।   

এম এ গফুর জানান, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে কোনো চিকিৎসক তাকে দেখতে আসেননি। চিকিৎসক আছেন কিনা তাও কেউ ঠিক মতো বলতে পারেন না। তার সমস্যার কথা শোনেননি বা কোনো ব্যবস্থাপত্র দেননি। এখানে রোগীদের সুস্থতার জন্য পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নেই। নোংরা, অপরিচ্ছন্ন ও দুর্গন্ধযুক্ত কেবিনে  অক্সিজেন দিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কেবিনের বাথরুম অপরিষ্কার। ঠিকমতো পানি সরবরাহ করা হয় না।

সাবেক এই ফুটবলারের অভিযোগ, রমেক হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত সরঞ্জামের সরবরাহ নেই। বেশিরভাগ ওষুধ বাহির থেকে আনতে হয়। গুরুতর অবস্থার সময় কাউকে ডেকে পাওয়া যায় না। সবাই নানা অজুহাত দেখায়। 

হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাসেবা না পাওয়ায় বাহির থেকে তিনজন চিকিৎসক এনে নিজের চিকিৎসা চালাচ্ছেন বলেও জানান এই ক্রীড়া সংগঠক। হাসপাতালের নানা অব্যবস্থাপনা ও অসঙ্গতি তুলে ধরে জেলা প্রশাসক ও হাসপাতাল পরিচালক বরাবর জানানো হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি বলে অভিযোগ করেন এম এ গফুর।

রংপুর অঞ্চলের মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত না হওয়া সম্পর্কে এম এ গফুর বলেন, আমার মতো মানুষ যদি এখানে চিকিৎসাসেবা না পান তাহলে সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবা পাওয়া তো আরও দুষ্কর। এখানে যাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করার কথা তারা রোগীদের গুরুত্ব দেন না। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক ও কষ্টের।

এসব অভিযোগের সত্যতা জানতে হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্স ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মোকাদ্দেম হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ক্রীড়া সংগঠকের চিকিৎসার বিষয়টি আমরা দেখছি। তবে তার অভিযোগের বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর