বছর দশেক আগে দুর্ঘটনায় বাবা মারা যান। মা তানজিলা খাতুন (৩৫) তিন বছর ধরে প্যারালাইজড। মায়ের পৈত্রিক জমিতে একটি কুঁড়ে ঘরে থাকেন দুই বোন তাহেরা খাতুন (১১) ও হুমায়রা খাতুন (১৫)। তবে বাবার শূন্যতা, মায়ের অসুস্থতা তাদের পড়াশোনার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। দুজনেই দাখিল মাদ্রাসায় পড়াশোনা করছেন। মানুষ তাদের যে সাহায্য দেন তা দিয়েই তারা পড়াশোনা চালিয়ে নেন। যদিও তাদের এই সংগ্রামী জীবনকে সহজ করার উদ্যোগ কেউ নেয়নি।

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়নের হলদিপোতা গ্রামের বাসিন্দা তানজিলা খাতুন। তার ছোট মেয়ে তাহেরা খাতুন বলে, মা কোনো কাজ করতে পারেন না। কাজ করে আমাদের খাওয়ানোর মতো কেউ নেই। আমরা পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাই। মানুষের কাছে হাত পেতে সাহায্য তুলে আমি ও আমার বোন পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের যদি কেউ পড়াশোনার দায়িত্ব নিত তাহলে আমাদের জীবনটা অনেক সহজ হতো। 

তাহেরা খাতুনের মা তানজিলা খাতুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, তিন বছর আগে আমার শরীরের ডান পাশ প্যারালাইসড হয়ে যায়। এরপর থেকে আমি কোনো কাজ করতে পারি না। আমার দুই মেয়ে ওরা পড়াশোনা বাদ দেয়নি। হাত পেতে সাহায্য তুলে তারা পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমার মেয়ে দুইটার অনেক বড় হওয়ার স্বপ্ন। তাদের পড়াশোনার দায়িত্ব যদি কেউ নিত তাহলে একদিন ওরা মানুষের মতো মানুষ হতে পারতো। আমাকেও দেখার কেউ নেই। আমার স্বামীর বাড়ির লোকজন আমার কোনো খোঁজ নেন না। শংকরপুর ইউনিয়নের হলদিপোতা ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মুজিবর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো।

পোদালিয়া দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি জাহান আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি বিষয়টি প্রথম জানলাম। আমি মাদ্রাসায় গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখবো। সাধ্যমতো তাদেরকে সহোযোগিতায় করবো।

এ্যান্টনি দাস অপু/এএএ