তিস্তাসহ অভিন্ন ৫৪ নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে রংপুরে মানববন্ধন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর পার্কমোড় চত্বরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘রিভারাইন পিপল ক্লাব’ এ কর্মসূচির আয়োজন করে।

সংগঠনটির আহ্বায়ক ছাওমুন পাটোয়ারী সুপ্তের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন রিভারাইন পিপলের পরিচালক বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ। 

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলা বিভাগের শিক্ষক খাইরুল ইসলাম পলাশ, রিভারাইন পিপলের তিস্তা সুরক্ষা কমিটির আহ্বায়ক মঞ্জুর আরিফ, শালমারা নদী সুরক্ষা কমিটির আহ্বায়ক শাহ জালাল, দুধকুমার নদী সুরক্ষা কমিটির আহ্বায়ক গ্রিন ইকোর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সঞ্জয় চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নদী সংগঠক আরিফুজ্জামান আরিফ প্রমুখ। 

মানববন্ধনে অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, তিস্তা উত্তরের জীবনরেখা। ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহারের কারণে তিস্তার আজ মরণদশা। ফলে আশীর্বাদক তিস্তা অভিশাপে পরিণত হয়েছে। আন্তর্জাতিক পানি প্রবাহ কনভেনশন অনুযায়ী ভারতের এক তরফা পানি প্রত্যাহার অবৈধ, মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ, জীববৈচিত্র্য তথা রংপুরের কৃষিনির্ভর অর্থনীতির স্বার্থে তিস্তায় ন্যায্য হিস্যার ভিত্তিতে পানি পাওয়ার কোনো বিকল্প নেই।

অন্য বক্তারা বলেন, ভারত আন্তর্জাতিক নদী আইন লঙ্ঘন করে একতরফাভাবে তিস্তাসহ অভিন্ন ৫৪ নদীর পানি প্রত্যাহার করছে। তিস্তার উজানে ভারতের গজলডোবায় বাঁধ দিয়ে পানি সরিয়ে নেওয়ার কারণে উত্তরবঙ্গ এলাকা এখন মরুভূমির পথে। ভারতের পানি আগ্রাসনের কারণে এ অঞ্চলের প্রাণ-প্রকৃতি-প্রতিবেশ বিপন্ন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। প্রমত্ত তিস্তা ধু-ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। হাজার হাজার মৎস্যজীবী, মাঝি বেকার হয়ে পথে বসেছেন।

তিস্তায় পানি না থাকায় কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে দাবি করে বক্তারা বলেন, বর্তমানে আবার ভারত নতুন দুটি খাল খনন করে তিস্তার পানি প্রত্যাহারের পাঁয়তারা করছে। এ সময় নতুন এসব খাল খননের চক্রান্ত বন্ধ, তিস্তাসহ সকল অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করেন বক্তারা।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন চুক্তির বিষয়টি চূড়ান্ত করার দাবি জানান বক্তারা। মানবন্ধনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন নদী সংগঠনের সংগঠকেরা অংশ নেন।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এএএ