চাঁদপুরের কচুয়ার তিন ব্যক্তিকে ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে ওই তিন ব্যক্তি লিবিয়ায় দলাল চক্রের হাতে আটক আছেন বলে তাদের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীদের একজনের স্ত্রী কচুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কচুয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কচুয়া উপজেলার সফিবাদ গ্রামের ইসমাইল মোল্লার ছেলে ইব্রাহিম (২২), মৃত আব্দুল জব্বার মোল্লার ছেলে কবির হোসেন (৪২) ও নুরুল ইসলামের ছেলে ইব্রাহিমকে (৪০) ইতালিতে পাঠানোর কথা বলে একই গ্রামের খোরশেদ আলম তার জামাতা রাকিবের মাধ্যমে প্রতি পরিবার থেকে চার লাখ টাকা করে হাতিয়ে নেন। চলতি বছরের ১৯ জুলাই ইতালি নেওয়ার নামে ওই তিনজনকে লিবিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদেরকে জিম্মি করে প্রত্যেকের পরিবারের কাছ থেকে পরে আরও দুই লাখ টাকা করে হাতিয়ে নেন দালাল খোরশেদ আলম। 

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের দাবি, ওই তিনজনকে কোনো কাজ দেওয়া হচ্ছে না। বরং আটকে রেখে তাদের নির্যাতন করা হচ্ছে।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে গত শনিবার দালাল খোরশেদ আলমের বাড়িতে সালিশ হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। ওই তিন ব্যক্তির দ্রুত মুক্তি চেয়ে বুধবার দুপুরে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা এবং এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেছেন। এ জন্য প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন তারা। সেই সঙ্গে দালাল চক্রের সদস্য খোরশেদ আলম ও তার জামাতা রাকিব হোসেনের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।  

ভুক্তভোগী কবির হোসেনের স্ত্রী নাজমীন, ইব্রাহিমের স্ত্রী রোজিনা আক্তার ও তাদের পরিবারের সদস্যরা জানান, দালাল খোরশেদ আলম ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তার স্ত্রী তাছলিমা বেগম, বোন নুরুন নাহার ও বাবা আবুল হাসেমের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিয়ে ইতালি না নিয়ে ভিন্ন কৌশলে লিবিয়ায় আটকে রেখে তাদের নির্যাতন করে আসছে।  তাদেরকে নানাভাবে কষ্ট দিচ্ছে।

সফিবাদ গ্রামের চাঁন মিয়া মোল্লা, আনিছুর রহমান ও বশির মিয়াজী জানান, খোরশেদ আলম ও তার পরিবারকে বিষয়টি বার বার বলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। তারা কোনোভাবেই বিষয়টি সমাধান করছেন না। বর্তমানে লিবিয়ায় দলাল চক্রের হাতে আটকে থাকা ইব্রাহিম, কবির হোসেন ও ইব্রাহিমকে ফেরত পেতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন তারা। 

এ বিষয়ে জানতে খোরশেদ আলমের বাড়িতে গেলে তার বাড়ির গেইট বন্ধ পাওয়া যায়। সেখানে পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে তার বোন নুরুন্নাহার বলেন, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে আমাদের বাড়িতে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সালিশ বৈঠক হয়। তারা সালিশ মানেনি। তাদের লোকগুলো এখন লিবিয়া ভালো আছে। যে সমস্যা ছিল তা সমাধান হয়েছে।

কচুয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। সত্যতা যাচাই-বাছাই করে তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

আনোয়ারুল হক/আরএআর