নগরীর সাহেববাজারে আরডিএ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ

চলমান লকডাউনের মধ্যেও দোকান খুলতে চান রাজশাহীর আরডিএ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। দোকান খোলার দাবিতে সোমবার (৫ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে রাস্তায় নামেন ব্যবসায়ীরা। নিষেধাজ্ঞা ভেঙে দোকানও খুলে বসেন অনেকে। খবর পেয়ে নগর পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা সেখানে পৌঁছান। তাদের আশ্বাসে দোকান বন্ধ করে ফিরে যান ব্যবসায়ীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে দোকান বন্ধ থাকলেও মালিক-কর্মচারীরা মার্কেটে জড়ো হন। বেলা ১১টার দিকে ফুটওভার ব্রিজের সামনে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন আরডিএ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন ও পাশের সাহেববাজার কাপড়পট্টির ব্যবসায়ীরা। ওই সময় নগরীর মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির একটি দল ঘটনাস্থলে দায়িত্ব পালন করছিল। পুলিশের কাছ থেকে হ্যান্ড মাইক নিয়ে দোকান খোলার ঘোষণা দেন ব্যবসায়ীরা। এই ঘোষণার পর অনেকে দোকান খুলে বসেন। পরে  প্রশাসনের কর্মকর্তাদের আশ্বাসে আধা ঘণ্টার মধ্যেই তারা দোকান বন্ধ করেন। 

এর আগে রোববার (০৪ এপ্রিল) দুপুরের দিকে আরডিএ মার্কেটে সংবাদ সম্মেলন করে রাজশাহী ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের সহসভাপতি রফিকুজ্জামান বেন্টু, সাধারণ সম্পাদক ফরিদ মামুদ হাসান, যুগ্ম সম্পাদক এবিএম মনোয়ার মুনতাজসহ ব্যবসায়ী নেতারা জানান, তারা সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে মার্কেট খোলা রাখতে চান। স্থানীয় প্রশাসন আন্তরিকতা না দেখালে তারা প্রয়োজনে আন্দোলনে যাবেন।

তাদের ভাষ্য, রাজশাহী শিক্ষানগরী। এক বছর ধরে করোনার কারণে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এই মন্দা পরিস্থিতিতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। গত বছরের লকডাউনে এখানকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সরকারি প্রণোদনা পাননি। মূলত রমজান মাসে ব্যবসা হয়। এই সময়ে মার্কেট বন্ধ থাকলে তারা আরও ক্ষতির শিকার হবেন।

দুপুরে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভের খবর পেয়ে আরএডিএ মার্কেটে যান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু আসলাম। তার সঙ্গে নগর পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারাও ছিলেন।

তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে। তারা সেটি মানতে সম্মত হয়েছেন। কেউ নির্দেশনা অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে লকডাউনের কারণে নগরীর সব দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। নিয়ম মেনে খোলা রয়েছে অফিস-আদালত। নগরীর সড়কে বাস না থাকলেও চলছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক। এর ভেতরেও বিভিন্ন গন্তব্য থেকে রাজশাহীতে আসছেন মানুষজন। নানা কৌশলে পাড়ি দিচ্ছেন গন্তব্যে। তবে গুনতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। 

লকডাউন কার্যকরে মাঠে রয়েছেন জেলা প্রশাসনের চারজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা। এর ভেতরেও অসচেতনভাবে চলাফেরা করছে নগরবাসী।

নগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, নগরীর প্রবেশপথগুলোতে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এছাড়াও জনগুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতেও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।  টহল জোরদার করা হয়েছে।  

তিনি আরও বলেন, প্রথমদিন আমরা মানুষকে সচেতন করছি। যাতে কেউ প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের না হন। তবে দ্বিতীয় দিন থেকে পুলিশ লকডাউন কার্যকরে কঠোর হবে।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর