আ.লীগের কাজ হচ্ছে জনগণের টাকা মেরে বিদেশে পাচার করা : শামা ওবায়েদ
বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের পায়ের নিচে মাটি নেই। তারা এখন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কে ভিসা স্যাংশন খাইছে আর কে খাই নাই সেটা নিয়েই ব্যস্ত।’
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ মোড়ে বিএনপির আঞ্চলিক অফিসে সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ে ফরিদপুর বিভাগীয় রোডমার্চ সাফল করার লক্ষ্যে ফরিদপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির আয়োজনে এক প্রস্তুতি সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
শামা ওবায়েদ বলেন, আওয়ামী লীগের সংগঠন বলে কিছু নেই। আওয়ামী লীগ নামে একটি বস্তু রয়েছে, যেখানে কিছু দুর্নীতিবাজ লোকজন আছে। তাদের কাজ হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণের টাকা মেরে বিদেশে পাচার করা, দুর্নীতি করা, খুন করা, গুম করা ও মামলা দেওয়া। এগুলো ছাড়া আওয়ামী লীগের এখন কোনো কাজ নেই।
তিনি আরও বলেন, ফরিদপুর বিভাগের পাঁচটি জেলা বিএনপি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও শহীদ জিয়ার ঘাঁটি। আগামী ৩ অক্টোবর ফরিদপুর বিভাগীয় রোডমার্চ হবে ইতিহাসের সেরা রোডমার্চ। ফরিদপুর বিভাগীয় রোডমার্চের মধ্যে দিয়েই এই দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিবাদ সরকার পতনের আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
বিজ্ঞাপন
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নুল আবদিন ফারুকের সভাপতিত্বে প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা জহরুল হক শাহজাদা মিয়া, ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বিএনপির জাতীয় কমিটির সদস্য সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছা, ফরিদপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, খন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুক।
এছাড়া কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ-সভাপতি আসলাম মিয়া, রাজবাড়ী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট লিয়াকত আলী বাবু, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন উর রশিদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আওয়াল মিন্টু বলেন, এই রোডমার্চ হচ্ছে ফ্যাসিবাদী সরকার পতনের আন্দোলন। এই রোডমার্চের পরেই হবে চূড়ান্ত আন্দোলন। সেই আন্দোলন হবে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন। এই অবৈধ ও অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের জন্য ১৯৯৫/৯৬ সালে আন্দোলন করেছিল। তখন তিনি (শেখ হাসিনা) বলেছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া সঠিক নির্বাচন হবে না। উনি বলতেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তিনি কোনো নির্বাচন মানেন না। এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য শেখ হাসিনা আন্দোলন করেছিল। আর এখন তিনি অবৈধভাবে ক্ষমতায় থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিচ্ছেন না। কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে ভোট চুরি ও ডাকাতি করতে পারবেন না।
তিনি আরও বলেন, এই এক দফা আন্দোলন বিএনপি ক্ষমতায় আসার জন্য নয়, এই আন্দোলন জনগণকে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আন্দোলন। কিছুদিন আগে এই অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলছিল আমার অপরাধ কি? সবাই ষড়যন্ত্র করছে আমাকে সরানোর জন্য। কিন্তু আমি বলি, যে প্রধানমন্ত্রী নিজের অপরাধ বুঝতে পারে না সে কি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা রাখে?
আবদুল আওয়াল মিন্টু বলেন, এই অবৈধ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিএনপির ১ হাজার ৪০০ নেতাকর্মীকে খুন করেছে। গুম করা হয়েছে প্রায় ৭০০ নেতাকর্মীকে। এছাড়া প্রায় লক্ষাধিক নেতাকর্মীর নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। খুন, গুম, অত্যাচার, হামলা, মামলা, নির্যাতন করার অপরাধে অবশ্যই এই অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর শাস্তি হবে একদিন। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। এই ফরিদপুর থেকেই ২ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে, তাহলে গোটা বাংলাদেশ থেকে কত টাকা পাচার করা হয়েছে?
প্রস্তুতি সভায় রাজবাড়ী জেলা বিএনপি, ফরিদপুর জেলা ও মহানগর বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষকদলসহ বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মীর সামসুজ্জামান/এমজেইউ