নিজের জমি বিক্রি করতে চাওয়ায় বাবার ওপর ক্ষিপ্ত হন ছেলে। সেই ক্ষোভ থেকেই বাবাকে ঘুমন্ত অবস্থায়  হত্যার চেষ্টা চালান। সেইবার প্রাণে বেঁচে যান বাবা। কিন্তু থেমে থাকেননি ছেলে। আবারও হত্যার পরিকল্পনা করেন। বাবাকে হত্যা করতে ভাড়া করেন একদল সন্ত্রাসী। কিন্তু এবারের পরিকল্পনাও ভেস্তে দিল পুলিশ। হত্যার পরিকল্পনা তো সফল হলোই না, উল্টো গ্রেপ্তার হয়ে ছেলেকে যেতে হলো কারাগারে। 

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় এমন ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার (৪ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ উপজেলার  পৌর মার্কেট এলাকা থেকে ছেলে উজ্জল দাস (৩২) ও তার তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাই কালাচাঁদ বিশ্বাস বাদী হয়ে মামলা করেন। পরে বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। 

গ্রেপ্তারকৃত উজ্জল দাস কোটালীপাড়া পৌরসভার ডহরপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী বিমল দাসের (৬০)  একমাত্র ছেলে। গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলেন- উজ্জ্বল দাসের সহকারী কোটালীপাড়া পৌর এলাকার পশ্চিম কয়খা গ্রামের রিয়াজুল খন্দকারের ছেলে ফিরোজ খন্দকার (২৭), একই গ্রামের নিখিল দাসের ছেলে সুজন দাস (২৫) ও সোহরাব হাওলাদারের ছেলে রমজান হাওলাদার (২৪)।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে উজ্জল দাস ভাড়াটে সন্ত্রাসীসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তার বাবা ব্যবসায়ী বিমল দাসকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার চেষ্টা চালান। এ ঘটনায় বিমল দাসের ভাই কালা চাঁদ দাস কোটালীপাড়া থানায় মামলা করেন। পুলিশ মামলা তদন্তে মাঠে নামে। তদন্তের একপর্যায়ে বিমল দাসকে হত্যাচেষ্টার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে উজ্জল দাসের নাম জানতে পারে পুলিশ। পরবর্তীতে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ উজ্জল দাস ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। বুধবার রাতে বিমল দাসকে দ্বিতীয় দফায় হত্যাচেষ্টার পরিকল্পনা করার সময় পৌর মার্কেট এলাকা থেকে উজ্জল দাসহ চারজনকে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। 

মামলার বাদী কালা চাঁদ দাস বলেন, আমার ভাই বিমল দাস তার ব্যবসায়ীক প্রয়োজনে কিছু জমি বিক্রির উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এ জমি বিক্রির কথা শুনে উজ্জল দাস তার বাবা বিমল দাসের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে হামলা চালায়। এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে কোটালীপাড়া থানায় মামলা করেছি। পুলিশ ইতোমধ্যে উজ্জল দাসসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। 

ব্যবসায়ী বিমল দাস বলেন, গত মাসের ১৮ তারিখ রাতে কিছু সন্ত্রাসী আমার ওপর হামলা করেছিল। এ ঘটনায় আমি তিন দিন খুলনা সিটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। তবে কারা আমার ওপর হামলা চালিয়েছিল তা আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে আমার ভাই কালা চাঁদ দাস বাদী হয়ে কোটালীপাড়া থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ তদন্ত করে কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে বলে আমি শুনেছি।

কোটালীপাড়া থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মামুনুর রশীদ বলেন, ব্যবসায়ী বিমল দাসকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ১১ জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে এই মামলার প্রধান আসামি উজ্জল দাসসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 

আশিক জামান/আরএআর