মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার তেউটিয়া ইউনিয়নের বড় নওপাড়া এলাকায় পদ্মা নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে পাকা ভবনসহ ১০টি বসতবাড়ি।

এলাকাবাসীর দাবি- মাত্র একদিনের ভাঙনে ১০টি বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও ভাঙন আতঙ্কে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে আরও ১৫টি বসতবাড়ি। বৃষ্টির কারণে নদীতে ঢেউ ও স্রোত বৃদ্ধি পাওয়ায়  গতকাল বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর ) রাত থেকে ভাঙন শুরু হয়, যা শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সকাল থেকে তীব্র আকার ধারণ করে।

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সকাল থেকে হঠাৎ করেই তীব্র ভাঙন শুরু হয় পদ্মা তীরবর্তী এলাকা নওপাড়ায়। মুহূর্তের মধ্যেই ১০টি বসতবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায় । পরে ভাঙন আতঙ্কে আরও ১৫টি বসতঘর সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এতে করে গৃহহীন হয়ে পড়েছে প্রায় ২৫টি পরিবার। অতি দ্রুত ভাঙন রোধ করা না গেলে ভাঙনের কবলে পড়বে লৌহজং ডিগ্রি কলেজসহ সরকারি বেসরকারি বহু স্থাপনা। ইতোমধ্যে ভাঙন কবলিত  এলাকা পরিদর্শন করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড ও মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। 

জানা গেছে, গত কয়েকদিনের চলমান বৃষ্টিপাতে পদ্মা নদীতে স্রোত ও ঢেউ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে লৌহজং উপজেলার তেউটিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে নদী তীরে হঠাৎ ভাঙন দেখা দেয়। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয়দের মাঝে। প্রায় ২০০ মিটারের অধিক জায়গা জুড়ে ভাঙনে নদীপাড়ে থাকা তীর ভেঙে পড়লে স্থানীয় জিতেন রাজবংশীর পাকা ভবন ও টিনের ঘর ও সুধন রাজবংশীর একটি ঘর নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এছাড়া স্বপন রাজবংশীর পাকা ঘর আংশিক ভেঙে পড়েছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে যে কোনো সময় ভেঙে পড়বে পুরো ভবনটি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পদ্মা নদীতে রাতভর অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বালুখেকোরা। এসব বালু শত শত বাল্কহেড দিয়ে প্রতিনিয়ত বিক্রি করা হয় করা হয় রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায়। নদীতে অবৈধ ড্রেজিং ও বাল্কহেড চলার কারণে তীব্র ঢেউয়ের প্রভাবে নদীর পাড় ভাঙছে। 

ভাঙন রোধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়ে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের যথাসাধ্য জেলা প্রশাসন থেকে সহযোগিতা করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ওই এলাকায় তীর রক্ষায় জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছিল আগে থেকে। ভাঙন দেখা দেওয়ায় অধিকতর জিও ব্যাগ ফেলে তা প্রতিরোধ করা হচ্ছে। একইসঙ্গে ওই এলাকা সংলগ্ন নদীতে যেন বাল্কহেড বা নৌযান আপাতত না চলে সেজন্য নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ডকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে এবং জলযানগুলো ওই এলাকার নদীর পাশ দিয়ে যাতায়াত করায় ১৫০ মিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন শুরু হয়েছিল। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে এলাকা পরিদর্শন করে  জিও ব্যাগ ফেলা শুরু করা হলে সন্ধ্যা নাগাদ ওই এলাকার ভাঙন অনেকটাই রোধ হয়ে আসছে। আগামীকাল শনিবার আবার জিও ব্যাগ ফেলা হবে। আশা করছি আগামীকালের মধ্যে ওই এলাকার ভাঙন রোধ হয়ে যাবে।

ব.ম শামীম/আরএআর