ঘুষের টাকা ফেরত পেতে মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. ফারুক হোসেনকে স্থানীয় একটি বাজারে অবরুদ্ধ করে রাখেন ভুক্তভোগীরা। বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার গোপালপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনার পর স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়ে ঘটনার তদন্ত করেন। তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

ভূক্তভোগী ও একাধিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. ফারুক হোসেন যোগদানের পর থেকে তিনি সেবা নিতে আসা লোকজনের কাছ থেকে নামজারি, দাখিলাসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করে দেওয়ার কথা বলে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তিনি টাকা নিয়েও কাজ করছেন না বলে ভুক্তভোগীদের দাবি। এমন কি তিনি নিয়মিত অফিসেও না আসার অভিযোগ রয়েছে। এতে করে ক্ষিপ্ত হয়ে উপজেলার গোপালপুর বাজারে ভুক্তভোগীরা তাদের টাকা ফেরত নেওয়ার জন্য অভিযুক্ত ওই ভূমি কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এতে করে ভূমি কর্মকর্তা অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান মো. ফরহাদ হোসেনের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী সাহাদাত, বাবুল ও টিটুসহ বেশ কয়েকজন ঢাকা পোস্টকে অভিযোগ করে বলেন, নামজারির জন্য আমরা প্রায় ছয়মাস আগে মোটা অংকের টাকা দিয়েছি ফারুক তহশিলদারকে। কিন্তু সে আমাদের কাজও করে দিচ্ছে না এবং টাকা ফেরতও দিচ্ছে না। তাই এলাকার প্রায় অর্ধশত ভুক্তভোগী তার কাছ থেকে টাকা ফেরত নেওয়ার জন্য অবরুদ্ধ করে রাখি। সে সরকারের কোনো নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করে না। আমরা তার বিচার দাবি করি এবং সে কিছু দালাল পালে তারা অফিসের সামনে বসে থাকে তার কাছে টাকা ফেরত চাইতে গেলে তারা হুমকিও দেয়।  

ভুক্তভোগী আয়নাল, রুবেল, আছিয়া, মনিরা শাজাহান, আলমগীর হোসেনসহ বেশ কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, আমাদের কাছে জমি নামধারী করার জন্য ১৫ হাজার টাকা নিয়েছে। কিন্তু, নামজারি করা তো দূরের কথা তার কাছে গেলে সে বিভিন্ন টালবাহানা করে। আজ, কাল বলতে বলতে প্রায় কয়েকমাস হয়েছে কিন্তু কিছুই করলো না। কাজও করে না, টাকাও ফেরত দিলো না। আমরা এর সঠিক বিচার চাই। 

অভিযুক্ত তহশিলদার বলেন, আমি যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি তাদের সবার কাজ করে দেব।

গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, এলাকার প্রায় অর্ধশত ভুক্তভোগী তার কাছ থেকে টাকা ফেরত নেওয়ার জন্য তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছি।

ডাসার উপজেলা নির্বাহী অফিসার কানিজ আফরোজ বলেন, গোপালপুর ইউনিয়নের তহশিলদার ফারুকের বিরুদ্ধে কয়েকবার অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি এবং বিষয়টি জেলা কর্মকর্তাদের আমি অবগত করেছি। তবে তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এ ব্যাপারে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান বলেন, তহশিলদারের বিষয়টি নোট করা হয়েছে।

রাকিব হাসান/এমএএস