স্বর্ণালংকার ভর্তি ব্যাগ পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন অহিদ মিয়া

স্বর্ণালংকার দেখলে লোভ হতে পারে যে কারো। কিন্তু পথে কুড়িয়ে পাওয়া ব্যাগে স্বর্ণালংকার দেখে লোভ হয়নি অহিদ মিয়ার (৪৫)। পেশায় দিনমজুর হলেও অর্থের লোভ থেকে নিজেকে রেখেছেন বহু দূরে।

প্রায় চার ভরি স্বর্ণালংকার ভর্তি একটি ব্যাগ পুলিশের মাধ্যমে প্রকৃত মালিকের কাছে পৌঁছে দিয়ে সততার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার চরকাওনা গ্রামের সাহেদ আলীর ছেলে অহিদ।

হোসেনপুর থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ধনকুড়া গ্রামের ঝুমা মজুমদার বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে পার্শ্ববর্তী জেলা গাজীপুরের কাপাসিয়ায় স্বামীর বাড়িতে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে স্বর্ণালংকারের ব্যাগটি হারিয়ে যায়। ওই ব্যাগে  প্রায় চার ভরি স্বর্ণালংকার ছিল। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও ব্যাগটি না পেয়ে ঝুমা মজুমদারের ভাই অয়ন চন্দ্র দে হোসেনপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

এদিকে পাকুন্দিয়া উপজেলার চরকাওনা গ্রামের সাহেদ আলীর ছেলে দিনমজুর অহিদ মিয়া হোসেনপুর-পাকুন্দিয়া সড়কের কাওনা গ্রামের রসুল প্রধানের বাড়িসংলগ্ন রাস্তায় হাঁটতে গেলে স্বর্ণালংকার ভর্তি ব্যাগটি কুড়িয়ে পান। পরে রাস্তা ও আশপাশের সব জায়গায় প্রকৃত মালিক খুঁজে না পেয়ে তিনি ব্যাগটি বুধবার (৭ এপ্রিল) হোসেনপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। হোসেনপুর থানা পুলিশ অনেক যাচাই-বাছাই করে রাত ১০টার দিকে স্বর্ণালংকারসহ ব্যাগটি প্রকৃত মালিককে বুঝিয়ে দেয়।

ঝুমা মজুমদারের ভাই অয়ন চন্দ্র দে বলেন, এতগুলো গয়না হারিয়ে আমাদের পরিবারের সবার মন অনেক খারাপ হয়ে গিয়েছিল। স্বর্ণালংকারসহ ব্যাগটি ফিরে পেয়ে পরিবারের সবাই আনন্দিত। আমার বোন ঝুমা তো এ চিন্তায় খাওয়া-দাওয়া ছেড়েই দিয়েছিল।

অয়ন আরও বলেন, এ রকম ভালো মানুষ এখনও দেশে আছে। ব্যাগে যা ছিল, সবই ঠিকমতো আমরা বুঝে পেয়েছি। কোনো কিছুই হারায়নি। আমরা সবাই অহিদ মিয়ার জন্য মন খুলে দোয়া করি।

দিনমজুর অহিদ মিয়া বলেন, স্বর্ণালংকারসহ ব্যাগটি পেয়ে অনেক চিন্তিত ছিলাম। ব্যাগটি কখন আসল মালিকের কাছে ফেরত দিব এ চিন্তায় গত রাতে ঘুমাতে পারিনি। এখন ফেরত দিতে পেরে সেই চিন্তা থেকে মুক্তি পেলাম।

হোসেনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোস্তাফিজুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, দিনমজুর অহিদ মিয়ার সততা দেখে আমরা মুগ্ধ। ব্যাগে যা ছিল সব ঠিকই আছে। কোনো কিছু হারায়নি। তার জমা দেওয়া স্বর্ণালংকার ভর্তি ব্যাগটি যাচাই-বাছাই করে আমরা ব্যাগের প্রকৃত মালিকের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছি।

এসকে রাসেল/আরএইচ