কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় হিসনা নদী দখল ও পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে গরুর খামার নির্মাণ করেছেন এক আওয়ামী লীগ নেতা। প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অভিযুক্ত জাকির হোসেন বুলবুল ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ। 

এদিকে নদীর পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে গরুর খামার নির্মাণ করায় নদীতে পানি নিষ্কাশনে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এতে সামান্য বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় স্থানীয়দের। নদীটি দখলমুক্ত করতে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা। 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হিসনা নদীর মাঝখানে দখল ও বালু দিয়ে ভরাট করে নদীর পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে প্রাচীর ও পাকা দালান নির্মাণ করেন আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেন বুলবুল। তিনি সেখানে বিশাল গরুর খামার করেছেন। নদী দখল করে গরুর খামার নির্মাণ করে দিব্যি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও লাভ হয়নি। রহস্যজনক কারণে প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। 

ফরিদুল ইসলাম নামে এক বাসিন্দা জানান, আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেন বুলবুল হিসনা নদীর পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে নদী দখল করে প্রাচীর ও পাকা দালান নির্মাণ করে গরুর খামার করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ওই প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা বুলবুল প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ করেই’ টিকিয়ে রেখেছে তার দখলদারিত্ব। ফলে কেউই তার ভয়ে মুখ খুলছেন না।

স্থানীয় বাসিন্দা মিলন জানান, হিসনা নদীটিতে একসময় বড় বড় নৌকা চলাচল করতো। আগে নদী পথ দিয়েই ছোট-বড় নৌকায় এই অঞ্চলের মানুষের চলাচল ছিল। কয়েকজন নেতা ও প্রভাবশালীরা দলের পরিচয় ব্যবহার করে নদী দখল অব্যাহত রেখেছেন। যার কারণে নদীটি এখন মৃত প্রায়। নদীটি পুনরায় খনন ও দখলবাজ নেতাসহ প্রভাবশালীদের হাত থেকে পুনরুদ্ধারের দাবি জানাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেন বুলবুল বলেন, নদী দখল করে আমি গরুর খামার নির্মাণ করিনি। এটা আমার নিজের সম্পত্তি। 

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, হিসনা নদী ১ নম্বর খতিয়ানের জায়গা। এইগুলো উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসন দেখভাল করে। এ বিষয়ে তারাই ব্যবস্থা নেবেন।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আকাশ কুমার কুণ্ডু বলেন, হিসনা নদীর জায়গা দখল করে গরুর খামার নির্মাণের বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজু আহমেদ/এএএ