ভরা মৌসুমের খরা কাটিয়ে ওঠার পর আবার ইলিশ প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষার্থে সরকার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

গত বুধবার (১১ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া এ নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকবে আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত। এ সময় মাছ ধরা, পরিবহন, বিপণন ও সংরক্ষণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

নদীর অভয়াশ্রম এলাকা ভোলা জেলার চর ইলিশা থেকে চর পিয়াল পর্যন্ত মেঘনা নদীর শাহবাজপুর শাখা নদীর ৯০ কিলোমিটার এলাকা, ভোলা জেলার ভেদুরিয়া থেকে পটুয়াখালী জেলার চর রুস্তম পর্যন্ত তেঁতুলিয়া নদীর প্রায় ১০০ কিলোমিটার এলাকায় এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবে। এদিকে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় বেকার হয়ে পড়েছে জেলার দুই লাখের বেশি জেলে।

যে কারণে অভাব-অনটন আর অনিশ্চয়তার মুখে পড়ছেন তারা। তবে নিষেধাজ্ঞার সময়ে পুনর্বাসনের জন্য প্রত্যেক জেলেকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। সেই চাল নির্ধারিত সময়ে বিতরণের দাবি জানায় জেলেরা।

এদিকে জেলায় অনিবন্ধিত প্রায় ৫০ হাজার জেলে রয়েছে। তারা বছরের পর বছর সরকারি সহায়তা থেকে বঞ্চিত বলে জানা গেছে।

জেলেরা বলছেন, এবার ভরা মৌসুমে ইলিশ কম থাকায় অনেকেই দেনার দায়ে জর্জরিত। এরই মধ্যে আবার ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা চলে আশায় দিশেহারা হয়ে পড়েছি।

ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা এলাকার জেলে হানিফ ও সফি মাঝি ঢাকা পোস্টকে বলেন, অভিযান এলে আমরা তা মেনে চলি। কিন্তু সরকার যে পরিমাণ চাল দেয় তা দিয়ে সংসার চালানো অনেক কষ্ট। এর মধ্যে ধারদেনা কিস্তির টাকা নিয়ে আমাদের অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। অভিযানের সময়টুকু ঋণের কিস্তি বন্ধের দাবিও জানায় জেলেরা।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজকের ছোট ইলিশই আগামীর বড় ইলিশ। সঠিক রক্ষাণাবেক্ষণের মাধ্যমে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব। তাই জাতীয় সম্পদ ইলিশ রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সবার। অভয়াশ্রমে মৎস্য শিকার বন্ধে ২২ দিন নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধসহ জাটকা ধরা, পরিবহন, বাজারজাত ও মজুদ নিষিদ্ধ রয়েছে। এই আইন অমান্য করলে নৌ পুলিশ, জেলা পুলিশ, কোস্টগার্ড ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।

জেলেদের পুনর্বাসনের চাল ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় বিতরণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলেও জানান এই মৎস্য কর্মকর্তা।

উল্লেখ্য, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ভোলার ৭ উপজেলা থেকে ১ লাখ ৯২ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে মৎস্য বিভাগ। যা দেশের মূল ইলিশ উৎপাদন ও আহরণের ৩৭ ভাগ আসে ভোলা থেকে।

আরকে