শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে টানা চার দিনের ছুটিতে ভারতগামী পাসপোর্টধারী যাত্রীদের চাপ বেড়েছে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে। ভরতগামী যাত্রীদের মধ্যে অনেকে যাচ্ছেন পূজা উদযাপন করতে আবার অনেকে যাচ্ছেন দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখতে। আবার অনেকেই ছুটিতে চিকিৎসার জন্য ভারতে যাচ্ছেন। স্বজনদের সঙ্গে পূজা উদযাপন করতে অনেকেই আবার ভারত থেকে বাংলাদেশে আসছেন।

যাত্রীদের অভিযোগ, বেনাপোল স্থলবন্দরের ভ্রমণ কর ও প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল চার্জ বাড়লেও বাড়েনি সেবার মান। 

তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, সেবা বাড়াতে জয়গা অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, গত তিন দিনে ১৯ হাজার ৬২৭ জন পাসপোর্টযাত্রী ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করছেন। এদের মধ্যে শনিবার (২১ অক্টোবর) বেলা ১১টা পর্যন্ত ৫ হাজার যাত্রী যাতায়াত করেছেন। এর আগে গত ১৮ অক্টোবর ৫ হাজার ৬৪৮ জন, ১৯ অক্টোবর ৬ হাজার ৫৮৯ জন, ২০ অক্টোবর ৭ হাজার ৩৯০ জন যাতায়াত করেছেন।  

পাসপোর্টধারীরা জানান, কয়েক বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে বিভিন্ন বিধিনিষেধ থাকায় পাসপোর্টধারীরা ইচ্ছেমতো ভারত-বাংলাদেশে যাতায়াত করতে পারেননি। তবে এখন এসব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় ভারত ভ্রমণে আর কোনো বাধা নেই। ছুটি পেয়ে পরিবার নিয়ে পূজা উপভোগ করতে, দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ, চিকিৎসা ও ব্যবসায়িক কাজে অনেকে ছুটছেন ভারতে। বাংলাদেশের স্বজনদের সঙ্গে পূজা উদযাপনের উদ্দেশ্যে ভারত থেকেও অনেকে আসছেন।

যাত্রীদের অভিযোগ, বর্তমানে ভারত ভ্রমণে বাংলাদেশ সরকারকে প্রত্যেক শিশুর জন্য ৫৫৫ টাকা ও বড়দের ১০৫৫ টাকা ভ্রমণ কর ও টার্মিনাল চার্জ এবং ভারত সরকারকে ভিসা ফি বাবদ ৮৪০ টাকা দিলেও সুবিধা বাড়েনি। বন্দরে যাত্রী ছাউনি না থাকায় গভীর রাত থেকে ঠান্ডা, রোদ-বৃষ্টির মধ্যে সড়কের ওপর দীর্ঘলাইন ধরে দাঁড়াতে হয় যাত্রীদের। রয়েছে দালাল চক্রের হয়রানি। দ্রুত কাজ করে দেওয়ার কথা বলে দালালরা টাকা নিয়ে প্রতারণা করছে। এ অবস্থায় সেবা বাড়ানোর দাবি পাসপোর্টযাত্রীদের।

ভারতগামী যাত্রী দিলীপ বিশ্বাস ও শান্তিবালা বলেন, এবার দুর্গাপূজায় ভারতে যাচ্ছি। তবে বেনাপোল বন্দরে ভোগান্তির শেষ নেই। শনিবার ভোর সাড়ে ৩টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়েও ইমিগ্রেশন শেষ করতে পারিনি। এ ছাড়া দালালদের দৌরাত্ম্য খুব বেশি। সেবা বাড়ানো দরকার বলে মনে করি।

ভারত থেকে আসা যাত্রী অনিতা চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে এসেছি স্বজনদের সঙ্গে পূজা উদযাপন করতে। সময় পেলে দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরবো।

বেনাপোল স্থলবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পের পরিদর্শক সঞ্জিব কুমার বড়ই বলেন, যাত্রীর চাপ বাড়ায় কিছুটা বিশৃঙ্খলা হচ্ছে। তবে সব ধরনের হয়রানি ছাড়া যাত্রী পারাপারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।

বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, স্বাভাবিক সময়ে বন্দর দিয়ে যাতায়াতকারী পাসপোর্টধারী যাত্রীর সংখ্যা চার হাজার হলেও বর্তমানে পূজার কারণে দ্বিগুণ হচ্ছে। তবে সেবা বাড়াতে জায়গা অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চলছে। সামনে এমন সময় আসছে, যখন কারো কোনো অভিযোগ থাকবে না। সময়ের ব্যাপার মাত্র।

এ্যান্টনি দাস অপু/আরএআর