প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেশীয় ফুটবলে বেশ সাড়া জাগিয়েছে ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমি। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের জনপ্রিয় মুখ ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন তার ফুটবল একাডেমি নিয়ে যেখানেই প্রীতি ম্যাচ খেলতে যাচ্ছেন সেখানেই হামলে পড়ছেন দর্শকরা।

রোববার (২২ অক্টোবর) বিকেলে নীলফামারীর জলঢাকার শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম মাঠে ইংরেজি দৈনিক ‘দি বাংলাদেশ টুডে’ এর আয়োজনে ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমি ও ড. জোবায়ের আলম ফুটবল একাডেমির মধ্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। এই ম্যাচ দেখতে দুপুর থেকেই দলে দলে মানুষ মাঠে আসতে থাকে। খেলা শুরুর আগেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় মাঠ। খেলা দেখতে দূরদূরান্ত থেকে আসেন হাজারো দর্শক। প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে অনেক দর্শক আশপাশের ভবনের ছাদে, দেয়ালের ওপর, গাছে উঠে ও টিনের ঘরের ছাউনির ওপর বসে খেলা উপভোগ করেন। খেলা শেষে ভক্ত-দর্শকদের সঙ্গে কথা বলেন ব্যারিস্টার সুমন। দর্শকদের অনুরোধে তাদের মোবাইল ফোন দিয়েই সেলফি তুলেন।

এ সময় ব্যারিস্টার সুমন বলেন, আমি যখন মাঠে নামি তখন দেখলাম সাইজে আপনাদের (জলঢাকা) ছেলেরা আমাদের ছেলেদের থেকে একটু ছোট। আমার খেলোয়াররা আমাকে তখন বলছে ভাই এরা সাইজে ছোট, মনে হয় আমাদের সঙ্গে পারবে  না। তখন আমি ওদেরকে বলেছিলাম উত্তরবঙ্গের মানুষ সাইজে ছোট হলেও ঝাল বেশি। ঠিকই আমার বড়গুলারে ফাঁকি দিয়ে গোল দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে। এত কষ্ট করে কোটি কোটি টাকা খরচ করছি আমার একাডেমির প্লেয়ারদের পেছনে। আর আপনাদের বাচ্চা বাচ্চা ছেলেরা আমাদেরকে হারিয়ে প্রমাণ করছে যে উত্তরবঙ্গের মানুষের মধ্যে দম আছে, আর সেটা কাজে লাগাতে পারে। আপনারা মনে করেন ঢাকার মানুষরাই বুঝি অনেক যোগ্যতাসম্পন্ন, আসলে তা না।

তিনি আরও বলেন, উত্তরবঙ্গের সঙ্গে আমাদের সিলেটের মানুষের একটা মিল আছে। আমরা বেশি চালাক না, আমরা মানুষকে ঠকায় না। কিন্তু আমাদের কপাল খারাপ, কয়েকটা নদী পার হয়ে আমাদের সিলেটের মানুষের উত্তরবঙ্গ আসতে হয়। আমার বিশ্বাস উত্তরবঙ্গ যদি আমাদের প্রতিবেশী হতো তাহলে মনে হয় সিলেটের বেশির ভাগ ছেলেমেয়ের বিয়ে উত্তরবঙ্গে হতো।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, আজকে হারলেও কষ্ট নেই। আমি আগেও বলেছি জীবনে যারাই আমাদের দাওয়াত দিয়ে ভালো করে আপ্যায়ন করে তাদেরকে আমি হারাতে পারিনি। এখানে যখন দেশি মুরগির সঙ্গে টাটকা মাছ খাইতে দিল তখনই বুঝছি আমার কপালে আর আজকে জিতা নেই। আমার হবিগঞ্জে আপনারা যাবেন। আজকে হারছি এটা কোনো জিনিস না, আপনাদের হৃদয়ে জায়গা নিতে পারলেই আমার জন্য আজকের এই মিশন সফল। সিলেটে বন্যার সময় উত্তরবঙ্গ থেকে বহু মানুষ আমাদেরকে সহযোগিতা করেছেন। সেজন্য সিলেটবাসীর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমি কথা দিচ্ছি আপনারা কখনো যদি দুর্দিনে পড়েন, আমরা সিলেটবাসী আপনাদের পাশে দাঁড়াব। এ সময় তরুণদের ভালোভাবে পড়াশোনা করার আহ্বান জানান তিনি।

খেলায় উপস্থিত ছিলেন নীলফামারীর জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ, পুলিশ সুপার গোলাম সবুর, দি বাংলাদেশ টুডের প্রকাশক ও সম্পাদক ড. জোবায়ের আলম, জলঢাকা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহেদ বাহাদুর, জলঢাকা পৌরসভার মেয়র ইলিয়াস হোসেন বাবলু, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন মুন, জলঢাকা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুক্তারুল আলম, জলঢাকা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ময়নুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, খেলায় ড. জোবায়ের আলম ফুটবল একাডেমি ১-০ গোলে ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমিকে পরাজিত করে।

শরিফুল ইসলাম/এমজেইউ