ঘূর্ণিঝড় হামুন
ঝুঁকিতে বরিশালের ৩ জেলা, সন্ধ্যার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জনের নির্দেশ
ঘূর্ণিঝড় হামুন বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় তিনটি জেলায় প্রথম আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার শওকত আলী। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে সার্কিট হাউসে হামুন মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় ভার্চুয়ালি ৬ জেলা প্রশাসক যুক্ত ছিলেন।
শওকত আলী বলেন, ঘূর্ণিঝড় হামুনের গতিপথ বিশ্লেষণ করে আবহাওয়া অফিস যা ধারণা করছে তাতে ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনার ওপর প্রথম আঘাত হানবে। এরপর বরিশাল, ঝালকাঠি ও পিরোজপুরে এর প্রভাব পড়বে। আমরা ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় বিভাগের সকল জেলায় পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র, মেডিকেল টিম, শুকনো খাবার, চাল, নগদ অর্থ ও ঝড় পরবর্তী উদ্ধার টিম প্রস্তুত রাখা রেখেছি।
বিজ্ঞাপন
বিভাগীয় কমিশনার জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশ্যে বলেন, কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস কাজে লাগিয়ে নদী থেকে নৌযান তীরে নিয়ে আসতে হবে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় বরাদ্দের অর্থ ও খাদ্য প্রয়োজনে সব বিলিয়ে দিতে হবে। শেষ হয়ে গেলে দ্রুত জানাবেন।
শওকত আলী বলেন, এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য বলছে মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকে বুধবার সকাল ১০টার মধ্যে আঘাত হানতে পারে হামুন। এজন্য সকল জেলার ঝূঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের রাত ৮টার মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে হবে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতিমা বিসর্জনে আগে রাত ১০টায় সময় বেঁধে দেওয়া হলেও ঘূর্ণিঝড়ের কারণে তা কমিয়ে সন্ধ্যার মধ্যে বিসর্জন সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পটুয়াখালী জেলা প্রশাসককে দুর্যোগকাল মোকাবেলায় প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর সহায়তা চাওয়ার জন্যও বলেন শওকত আলী।
সভায় স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধতন কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
বরিশাল জেলায় ৫৪১ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত
ঘূর্ণিঝড় হামুন মোকাবিলায় বরিশাল জেলায় ৫৪১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম। একই সঙ্গে ৬১টি মেডিকেল টিম ও ৩২২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে নিজ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলা সমন্বয় কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব তথ্য জানান।
জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম আরও জানান, দুর্যোগপরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ৯ লাখ ৩৬ হাজার নগদ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) বরিশালের উপ-পরিচালক শাহাবুদ্দিন মিয়া জানিয়েছেন, সংকেত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সিপিপি কর্মীরা জনসচেতনতায় কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদের বিভাগে ৩৩ হাজার ২৮০ জন কর্মী ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় সর্তকীকরণ প্রচারণা চালাচ্ছেন।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর