নওগাঁয় এবছর ৮২৬টি মণ্ডপে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) ছোট যমুনা নদীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব শেষ হয়েছে।

এ উপলক্ষ্যে সকালে মণ্ডপে মণ্ডপে পূজা অর্চনা এবং সিঁদুর খেলার মধ্য দিয়ে ভক্তরা মা দুর্গাকে স্ব-স্ব মণ্ডপ থেকে বিদায় দেন। দুপুরের পর থেকে প্রতিমাগুলো নিজ নিজ মণ্ডপ থেকে ছোট যমুনা নদীর তীরে এনে নৌকায় তোলা হয়।

শহরের ৫৬টি প্রতিমা, পার্শ্ববর্তী সান্তাহারসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা শতাধিক প্রতিমা ছোট যমুনা নদীর নৌবিহারে অংশ নেয়। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিবার-পরিজন নিয়ে নৌকায় নেচে-গেয়ে উৎসব বিজয়া দশমীর শেষ মুহূর্ত উপভোগ করেন হাজারো ধর্মাবলম্বীরা।

শহরের দক্ষিণের শ্মশানঘাট, দহের ঘাট এবং উত্তরের উকিলপাড়া ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলে নৌবিহার। যা উপভোগ করতে শহরের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত যমুনার নদীর দুই তীরে ভিড় জমে দর্শনার্থীদের। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণে নদী তীরবর্তী এলাকা পরিণত হয় এক মিলন মেলায়। দীর্ঘ সময় নৌবিহার শেষে সন্ধ্যা ৭টার পর দহের ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।

নৌবিহারে অংশ নেওয়া ডা. আশিষ সরকার বলেন, আমাদের কাছে বছরের সবচেয়ে বড় উৎসব এটি। তাই পাঁচ দিন দ্রুত শেষ হয়ে যাওয়ায় কিছুটা খারাপ লাগছে। দুর্গাপূজা শেষে প্রতিমা বিসর্জনের মূল লক্ষ্য সৃষ্টির খারাপ শক্তিকে বিসর্জন দেওয়া। এই বিসর্জনের মধ্য দিয়ে মঙ্গলময় শক্তিকে জাগ্রত করা হয়। এর ফলে বিশ্ববাসীর কল্যাণে সকলে এগিয়ে আসবে, এমনটাই প্রত্যাশা করছি।

নদীর তীরে দাঁড়িয়ে বিসর্জন দেখা দর্শনার্থী অনামিকা মন্ডল বলেন, এবার পূজার প্রথম দিন থেকেই সুশৃঙ্খল পরিবেশে ঘুরতে পেরেছি। প্রত্যেকটা মন্দির ঘুরেছি, নেচেছি। নৌকায় ঠেলাঠেলি করে ওঠার সাহস পাইনি। তাই পাড়ে দাঁড়িয়ে সপরিবারে নৌবিহার দেখছি। পরিচিতদের নৌকায় দেখে খুব ভালো লাগছে।

শ্রাবণী বসাক নামে আরেক দর্শনার্থী বলেন, বিজয়া দশমীর শুরুতেই অঞ্জলি প্রদান করেছি। এরপর মণ্ডপে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নাচ-গান করেছি। দুপুরের পর নৌকায় প্রতিমা উঠিয়ে সন্ধ্যায় বিসর্জন দেওয়া হলো। এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় দুর্গোৎসব অনেক উৎসবমুখর ছিল।

ঢাকা থেকে নওগাঁয় মায়ের বাড়িতে দুর্গোৎসব পালন করতে আসা গৃহবধূ মমতা সাহা বলেন, এবারের দুর্গাপূজা দারুণ কাটিয়েছি। ঢাকায় থাকলে চার দেয়ালের মধ্যে নামমাত্র পূজা করতে হতো। দুই মেয়ের অনুরোধে তাদের নিয়ে চলে এসেছি। দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জন দেখাটা আমাদের জন্য অনেক আনন্দের।

আরমান হোসেন রুমন/এসএসএইচ