গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেছেন, গাজীপুরে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিক অসন্তোষ চলছে। এ অসন্তাষ সৃষ্টির পেছনে শ্রমিকদের ইন্ধন দেওয়ার তথ্য পাওয়ার পর পুলিশ ইন্ধনদাতাদের খুঁজছে।

 পোশাক শ্রমিকদের নতুন করে বেতন বৃদ্ধির দাবি ও অসন্তোষ সৃষ্টির প্রেক্ষিতে পোশাক শ্রমিক এবং পোশাক সংগঠনের নেতাদের প্রতি মজুরি বোর্ডের সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত কারখানা এলাকায় কোনো প্রকার উত্তেজনা ও অসন্তোষ সৃষ্টি না করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

বুধবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর দপ্তরের মিলনায়তনে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ও পোশাক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। 

জিএমপি কমিশনার বলেন, পোশাক কারখানায় যাতে কোনো প্রকার অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, সেজন্য শ্রমিকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। সামনে বিরোধী দলের আন্দোলনের যে কর্মসূচি আছে তার সঙ্গে শ্রমিকদের আন্দোলনের যাতে সম্পর্ক না তৈরি হয় সে দিকেও এলার্ট থাকতে হবে।  

স্বাধীন গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশরেনর কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাকিল আহমেদ বলেন, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সামনে বিরোধী দলের আন্দোলন সমাবেশকে বেগবান করতে অনেকেই পোশাক শ্রমিকদের ইন্ধন দিয়ে পোশাক কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি করতে পারে। আমরা এ ব্যাপারে শ্রমিকদের সচেতন করছি। এ সরকারের আমলে কয়েক দফা বেতন বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে আবারও বেতন নিয়ে মজুরি বোর্ডে আলোচনা চলছে। এ মুহূর্তে শ্রমিকদের আন্দোলনে না গিয়ে ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানান তিনি। 

সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের টঙ্গী আঞ্চলিক কমিটির সংগঠক শেখ রুবেল বলেন, আমাদের সংগঠনের কোনো নেতৃবৃন্দ চলমান পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনে জড়িত নয়। আমরা এ সেক্টরে বিশৃঙ্খলা চাই না। যারা বিশৃঙ্খলা করছে তারা শ্রমিক না কি বহিরাগত তা সিসি টিভি ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করতে হবে।

বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি মো. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, শ্রমিকদের বেতন নিয়ে সরকার ওয়েজবোর্ড গঠন করেছে। ওয়েজবোর্ডে মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধি উভয়পক্ষই আছে। উভয় পক্ষের আলোচনার ভিত্তিতে ওয়েজবোর্ড একটা মজুরি নির্ধারণ করবে। তার আগেই এ ধরণের অসন্তোষ সৃষ্টি করে ওয়েজবোর্ডের ওপরে প্রেসার ক্রিয়েট করে বেতন বাড়ানোর সুযোগ নেই। এখন তারা যা করছে তা ঠিক নয়। বেতন তো এখনো সরকার নির্ধারণই করেনি। ওয়েজবোর্ডতো সরকারের আন্ডারে। বেতনাটা ঠিক হবে, তারপর তা কম না বেশি হয়েছে, তাদের পছন্দ হলো নাকি হলো না- সেই প্রশ্ন উঠবে। 

সভায় বিজিএমইএ’র পরিচালক মো. মনসুর খালেদসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন পোশাক শ্রমিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

শিহাব খান/আরএআর