ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার রত্নাই সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত বাংলাদেশি নুরুজ্জামানের (৪৫) মরদেহ ফেরত দিয়েছে ভারত। বুধবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে রত্নাই সীমান্তের শূন্যরেখায় ভারতের ইসলামপুর থানা পুলিশ বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশের কাছে মরদেহটি হস্তান্তর করে।

এ সময় বিএসএফ এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা ছাড়াও বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নিহত নুরুজ্জামানের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। নিহত নুরুজ্জামান বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের রত্নাই গ্রামের তসলিম উদ্দীনের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গরু ব্যবসায়ী নুরুজ্জামানসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী মিলে সোমবার (২৩ অক্টোবর) ভোররাতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের রত্নাই বিজিবি ক্যাম্পের সীমান্তের জিরো পয়েন্টে গরু কিনতে যান। এ সময় ওপারের ভারতের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর থানার অন্তর্গত সোনামতী ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে নুরজ্জামান গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। বাকিরা কোনোরকমে এপারে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়। পরে সোনামতী ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে নিহত নুরজ্জামানের মরদেহ টেনেহিঁচড়ে ওপারে তাদের ক্যাম্পে নিয়ে যায়।

নিহত নুরুজ্জামান ভারতীয় গরুর ব্যবসা করতেন। দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। স্ত্রী ও চার সন্তানকে নিয়ে ছিল তার সংসার। বাবার এক বিঘা ভিটেবাড়ি ছাড়া অন্য কোনো জমিজমা নেই। ওই ভিটাতেই মা-বাবাসহ দুই ভাই বসবাস করতেন।

নিহত নুরুজ্জামানের স্ত্রী ঢাকা পোস্টকে জানান, তার স্বামী ভারতীয় গরুর ব্যবসা করতেন। কিন্তু তিনি ভারতে যেতেন না। অন্য লোকজন গরু নিয়ে আসতেন। ওই দিন তিনি কেন গিয়েছিলেন বলতে পারছেন না। রোববার রাত ১০টার আগে বাড়িতে খাওয়াদাওয়া করে বের হন। এরপর আর ফেরেননি। লোকজনের কাছে শুনেছেন, গুলিতে তিনি মারা গেছেন। ছোট ছেলে-মেয়েদের নিয়ে তিনি এখন নিরুপায়।

স্থানীয় আমজানখোর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আকালু মোহাম্মদ ডংগা ঢাকা পোস্টকে বলেন, মরদেহ বুঝে পাওয়ার পরপরই নিহত ব্যক্তির বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। আজ বুধবার রাতে রত্নাই এলাকায় পারিবারিক গোরস্তানে নুরুজ্জানের মরদেহ দাফন করা হবে।

বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোবাহান বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় রত্নাই সীমান্তের জিরো পয়েন্টে উভয় দেশের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে নিহত নুরুজ্জামানের মরদেহ পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়। পরে  নুরুজ্জামানের পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

আরিফ হাসান/এমজেইউ