যৌতুকের জন্য সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে হত্যার দায়ে স্বামীসহ একই পরিবারের পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে হবিগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল (২) এর বিচারক মো. জাহিদুল হক এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- চুনারুঘাট উপজেলার সাদেকপুর গ্রামের রাসেল মিয়া (২৫), তার বড় ভাই কাউছার মিয়া (৩২), মা তাহেরা বেগম (৫০), বড় বোন রোজী বেগম (২৭) ও ছোট বোন হোছনা বেগম (২০)। এদের মধ্যে কাউছার মিয়া পলাতক রয়েছেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, এক লাখ টাকা যৌতুক চেয়ে ২০১৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা থেকে ৩টার মধ্যে রাসেল মিয়া তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী তাহেরা খাতুন ওরফে আয়েশাকে মারধর করেন। একপর্যায়ে সংকটাপন্ন অবস্থায় তাহেরা খাতুনকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনি মারা যান। ঘটনার আট মাস পূর্বে তাদের বিয়ে হয়। পরদিন তাহেরার বাবা একই উপজেলার পঞ্চাশ গ্রামের আব্দুস ছত্তার দণ্ডপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে চুনারুঘাট থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চুনারুঘাট থানা পুলিশের এসআই ফারুক হোসেন ২০১৭ সালের ৩ মার্চ চার্জশিট প্রদান করেন। কিন্তু বাদীপক্ষ চার্জশিটে নারাজি প্রদান করলে আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) মামলাটি পুনরায় তদন্ত করার আদেশ দেন। পিবিআইয়ের এসআই মইনুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করে ২০১৭ সালের ১১ নভেম্বর পাঁচজনকে আসামি করে চার্জশিট প্রদান করেন। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আজ এ রায় দেন।

এ রায়কে যুগান্তকারী উল্লেখ করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট আবুল মনসুর চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ রায়ের ফলে নারী নির্যাতন ও যৌতুক কিছুটা হলেও কমে আসবে।

আজহারুল মুরাদ/এমজেইউ