ছেলে বামন হওয়ায় বিয়ের জন্য কনে মিলবে কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন বাবা-মা। অন্যদিকে  বামন মেয়েকে নিয়েও চিন্তায় ছিলেন পরিবারের লোকজন। দীর্ঘ চেষ্টার পর অবশেষে শুক্রবার (০৯ এপ্রিল) রাতে ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌর এলাকার আউশিয়া গ্রামে দুই বামন ছেলে-মেয়ের বিয়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রামের লোকজনের সহযোগিতায় তাদের বিয়ে দেওয়া হয়। 

শনিবার (১০ এপ্রিল) সকাল থেকেই নবদম্পতিকে দেখতে বরের বাড়িতে ভিড় করেন উৎসুক জনতা। অনেকে উপহার হাতে তুলে দিয়ে এই দম্পতির জন্য দোয়া করেন। 

শৈলকুপা পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. বকুল আলী বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, পৌর এলাকার আউশিয়া গ্রামের আজিবার মন্ডলের ছেলে আব্বাস মন্ডল তেমন কোনো কাজকর্ম করতে পারেন না। আমরা পৌরসভা থেকে তার জন্য একটা প্রতিবন্ধী কার্ড করে দিয়েছি। আব্বাস বামন হওয়ায় তার বয়স ৩০ হলেও উচ্চতা মাত্র ৪০ ইঞ্চি। বামন হওয়ায় কেউ তার সঙ্গে মেয়ে বিয়ে দিতে চাইতো না। এর মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে উপজেলার লক্ষন্দিয়া গ্রামের ইউনুস আলী মোল্লার বড় মেয়ে বামন মিম খাতুনকে তার পছন্দ হয়। পরে এলাকার লোকজনের সহযোগিতায় তাদের বিয়ে দেওয়া হয়।

আব্বাস মা সাহিদা বেগম ঢাকা পোস্টকে জানান, তার দুই ছেলে। ছোট ছেলের উচ্চতা স্বাভাবিক। অনেক আগেই ছোট ছেলেকে বিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু বড় ছেলে আব্বাস বামন হওয়ায় তাকে নিয়ে সব সময় চিন্তা করতেন পরিবার। অবশেষে সেই দুশ্চিন্তার অবসান ঘটেছে। লক্ষন্দিয়া গ্রামের ইউনুস আলীর বড় মেয়ে বামন হাওয়ায় ছেলের বউ হিসেবে পছন্দ করেন। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় শুক্রবার রাতে আব্বাস-মিমের বিয়ে হয়। রাতেই পুত্রবধূকে বাড়িতে নিয়ে এসেছেন। ছেলের বিয়ে দিতে পেরে তারা খুশি। বউকে নিয়ে ছেলে সুখী হবে এখন এটাই আশা। 

স্থানীয় ওষুধ ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, শনিবার সকালে গ্রামের কয়েকজন মিলে নবদম্পতিকে দেখতে আব্বাস মন্ডলের বাড়িতে যাই। ব্যতিক্রমী এই নবদম্পতিকে দেখে তাদের হাতে উপহার তুলে দেই। 

শৈলকুপা পৌরসভার মেয়র কাজী আশরাফুল আজম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আউশিয়া গ্রামের আব্বাস মন্ডল বামন হওয়ায় তাকে আমরা একটি প্রতিবন্ধী কার্ড করে দিয়েছি। সেখান থেকে তিনি আর্থিক সুবিধা পান। তার বয়স ৩০ এর বেশি হলেও বিয়ের জন্য কোনো মেয়েই তাকে পছন্দ করতো না। হঠাৎ করেই আজ জানতে পারি লক্ষন্দিয়া গ্রামের ইউনুস আলীর মেয়ে বামন মিমের সঙ্গে গত রাতে তার বিয়ে হয়েছে। 

নবদম্পতি আব্বাস ও মিম ঢাকা পোস্টকে জানান, সমাজের চোখে বামন হলেও বিয়ে করে তারা খুশি। এই নবদম্পতি সবার দোয়া কামনা করেন। 

আব্দুল্লাহ আল মামুন/আরএআর