নিহত বিল্লালের বাড়িতে এলাকাবাসী ও স্বজনদের ভিড়

বিএনপি-জামায়াতের ডাকা অবরোধের প্রথম দিনে কিশোরগঞ্জের কুলিয়াচরে বিএনপি-আওয়ামী লীগ ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার ছয়সূতী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২০ জন।

নিহতরা হলেন- কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতি ইউনিয়নের বড় ছয়সূতি এলাকার চা-দোকানি কাউছার মিয়ার ছেলে ও চার নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সহ-সভাপতি শেফায়েত উল্লাহ (২০) এবং একই ইউনিয়নের মাধবদী এলাকার কাজল মিয়ার ছেলে ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড কৃষক দলের সভাপতি বিল্লাল হোসেন (৩০)।

নিহতদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শোকের মাতম চলছে। কোনো সান্ত্বনাতেই থামছে না সন্তানহারা মায়েদের কান্না। স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে এলাকার পরিবেশ। দুজনের হত্যার বিচার দাবি জানিয়েছেন স্বজনরা।

নিহত শেফায়েত উল্লাহর ফুফু ফারজানা বেগম বলেন, ‘একটা সময় বলতো পুলিশ নাকি জনগণের বন্ধু। কিন্তু সেই পুলিশের গুলিতেই আমার ভাতিজার মৃত্যু হলো। আমরা সাধারণ মানুষ, আমার ভাতিজার হত্যার বিচার কই দিমু।’

নিহত বিল্লালের মা নাজমা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমার ছেলে বিল্লাল সকালে ঘুম থেকে উঠে বাড়ি থেকে বাইর হয়ে যায়। কিছু সময় পরই মানুষের কাছে শুনতে পাই ছয়সূতি বাসস্ট্যান্ডে বিএনপির মিছিলে নাকি পুলিশ গুলি চালাইছে। সেই গুলিতেই আমার ছেলে মারা গেছে। এ খবর শুনে বাড়ি থেকে দৌড়ে গিয়ে দেখি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে আমার পোলা। আমার সন্তানের রক্তাক্ত মরদেহ দেখে কোলে তুলে নেই। আমার কাছ থেকে পুলিশ ছেলের মরদেহ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। আমার ছেলেকে পুলিশ গুলি করে মেরে ফেলেছে। আমার ছেলে হত্যাকারীদের বিচার চাই।’

কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন বলেন, পুলিশ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী কিন্তু এই পুলিশ আমাদের যেকোনো শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিনা উসকানিতে হামলা ও গুলি বর্ষণ করছে। এতে আমাদের কুলিয়ারচরের দুই নেতা মারা গেছেন। তাছাড়া অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আমাদের ভৈরব উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের ওপরও হামলা ও দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে। আমরা ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কে শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ কর্মসূচি পালন করতে চেয়েছিলাম কিন্তু সেখানেও পুলিশ হামলা চালায়।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ কুলিয়ারচরের সংঘর্ষে দুজন নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মোহাম্মদ এনামুল হক হৃদয়/এমজেইউ