সাভারের আশুলিয়ায় রেজিস্ট্রেশনের দাবিতে গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রধান গেটে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় জরুরি বিভাগ, ডায়ালাইসিস ও টিকা কার্যক্রম ব্যতীত হাসপাতালের সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

সোমবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আশুলিয়ার বাইশমাইল এলাকার গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। শিক্ষার্থীদের দাবি- মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। জরুরি বিভাগের রোগী ছাড়া অন্য কোনো রোগীকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ফলে বিপাকে পড়েছেন সেবা গ্রহীতারা।

শিক্ষার্থীরা জানান, ২৬ তম ব্যাচ পর্যন্ত ৬০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ একটি রিট করে ১১০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি চায়। নিম্ন আদালত প্রাথমিকভাবে ১১০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির রিট আমলে নিয়ে অনুমতি দেন। এই প্রাথমিক অনুমতিতে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ ১১০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করে। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে শুনানির দিন ধার্য করে আদালত। এমতাবস্থায় পরীক্ষা শুরু হলেও মেডিকেল কলেজের কোনো শিক্ষার্থীই পরীক্ষা দিতে পারেনি। ফলে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী আইরিন সুলতানা বলেন, মেডিকেল কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে তাদের সমস্যা গোপন রেখে ভর্তি নেয়। ভর্তির দীর্ঘদিন পর আমরা জানতে পারি কর্তৃপক্ষ একটি রিটের প্রথম শুনানির ওপর নির্ভর করে ৬০ জন শিক্ষার্থীর জায়গায় ১১০ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করেছে। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আপিল করায় আমাদের সকলের পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়। আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি।

শিক্ষার্থী ফাতেমা তুজ জোহুরা বলেন, কর্তৃপক্ষ লিখিত দিয়েছিল আমরা গত ২ নভেম্বর পরীক্ষা দিতে পারবো। কিন্তু আমাদের পরীক্ষা দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা করেনি মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। বাধ্য হয়ে গত তিন দিন ধরে আমরা আন্দোলনে নেমেছি। আমরা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রধান গেটসহ সমস্ত গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছি। আমাদের রেজিস্ট্রেশনের সমস্যা সমাধান না করা পর্যন্ত আমরা জরুরি বিভাগ, টিকা কার্যক্রমসহ জরুরি তিন বিভাগ ব্যতিত সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বাধ্য করেছি।

গণস্বাস্ব্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবু তাহের বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। আমরা সিট বাড়ানোর জন্য রিট করেছিলাম। এই রিটে আদালত আমাদের ১১০ জন শিক্ষার্থী ভর্তিতে রায় দেন নিম্ন আদালত। এই রায়ের ভিত্তিতে আমরা শিক্ষার্থীদের ভর্তি করেছিলাম। কিন্তু রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফলে শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন আটকে যায়। তবে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বেঁচে থাকলে হয়তো এই সমস্যায় পড়তে হতো না। বর্তমানে হাসপাতালের সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীরা গত তিন দিন ধরে আন্দোলন করছেন।

মাহিদুল মাহিদ/আরএআর