লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় কলেজ অধ্যক্ষের অফিস কক্ষে ঢুকে তার ল্যাপটপ ভাঙচুর ও তাকে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। 

সোমবার (৬ নভেম্বর) রাতে ছাত্রলীগ নেতা ইয়াকুব আলীর বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভেলাবাড়ি স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ আনিছুল হক। 

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ইয়াকুব আলী উপজেলার ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের শালমারা গ্রামের রবির উদ্দিনের ছেলে। তিনি ভেলাবাড়ি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।

অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার ভেলাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদটি শূন্য হওয়ায় পদটিতে নিয়োগ নিতে অধ্যক্ষককে চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন ছাত্রলীগ নেতা ইয়াকুব আলী। ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব দেখিয়ে অধ্যক্ষকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছিলেন তিনি। পদটি দখলে নিতে ইয়াকুব কিছুদিন নিজে থেকে প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী হিসেবে প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতও করেছেন। 

সোমবার বিকেলে অধ্যক্ষকে ফোন করে অফিসে থাকতে বলেন ছাত্রলীগ নেতা ইয়াকুব আলী। কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে গিয়ে তাকে দ্রুত নিয়োগের জন্য চাপ দেন। এ সময় অধ্যক্ষ ল্যাপটপে কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় ইয়াকুব রাগান্বিত হয়ে তার সামনে থেকে ল্যাপটপটি তুলে ছুড়ে মেরে ভেঙে ফেলেন। একই সঙ্গে অধ্যক্ষ ও তার স্ত্রীকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে কলেজ ত্যাগ করেন। 

এ ঘটনায় ভেলাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ আনিছুল হক বাদী হয়ে ছাত্রলীগ নেতা ইয়াকুব আলীর বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। 

বাদী অধ্যক্ষ আনিছুল হক বলেন, ছাত্রলীগের ক্ষমতা দেখিয়ে বিভিন্ন অপরাধ করে আসছেন ইয়াকুব আলী। কিছুদিন আগে ব্যাট হাতে নিয়ে মহড়া দিয়ে এলাকায় ভীতি সৃষ্টি করেছেন। যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। প্রতিষ্ঠানের সম্পদ নষ্টসহ আমার পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে আমি থানায় আবেদন করেছি। এখন ন্যায় বিচার দাবি করছি। 

উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরহাদ আলী হিমেল বলেন, কেউ অপরাধ করলে তার দায় সংগঠন কখনই নেবে না। ব্যক্তির অপরাধের দায় ব্যক্তিকেই নিতে। 

অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নেতা ইয়াকুব আলীর কাছে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্যারের কাছ থেকে কাজের জন্য ল্যাপটপ নিতে গিয়ে হাত থেকে পড়ে গিয়ে একটু ভেঙে গেছে। আর কোনো নিয়োগের জন্য আমি কেন চাপ দিতে যাব। আমি ওই প্রতিষ্ঠানের কেউ না। তারা যে অভিযোগ আমার নামে দিচ্ছে তা আসলে মিথ্যে।

আদিতমারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিয়াজ আহমেদ সিপন/আরকে