ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়নের গাবতলা গ্রামের মৃত আবু তাহেরের সন্তান রাজন (২৭)। জন্মের পর থেকেই চলছে তার জীবনযুদ্ধ। এক দুর্ঘটনায় দুই হাত হারিয়ে অভাব-অনটনে ভরা তার জীবনযুদ্ধ হয়ে উঠেছে আরও কঠিন। রাজন এবার বেঁচে থাকার সংগ্রামে হার মেনে নিয়েছেন। তার সঙ্গে ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ৩ বছরের একমাত্র শিশুপুত্র সিফাতেরও। 

স্থানীয় সূত্র জানা যায়, রাজন অভাবের সংসারে ৫ম শ্রেণির পাঠ চুকিয়ে রাজমিস্ত্রির কাজ শুরু করে। ১০ মাস আগে উপজেলার গোসাইপুরে কাজ করতে গিয়ে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটে দুই হাত হারান তিনি। তখন আহত রাজন স্থানীয় হাসপাতাল থেকে ঢাকায় বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হলেও তার দুই হাত আর ফিরে পাননি। এর দুই বছর আগে তার অভাবের সংসারে অভিমানে আত্মহত্যা করেন তার স্ত্রী। বর্তমানে তার ছোট্ট ছেলে সিফাতের দেখভাল করার দায়িত্ব বৃদ্ধ দাদি ফাতেমা খাতুনের (৬০) ওপর। 

নিজের কষ্টের কথা তুলে ধরে রাজন বলেন, থাকার ঘরটির অবস্থাও আমার দুই হাতের মতোই, কোনোরকমে দাঁড়িয়ে আছে। বড় ভাইদের সহযোগিতায় খেয়ে না খেয়ে মা ও শিশু পুত্রকে নিয়ে বেঁচে আছি। তবে সবকিছু কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। গত একবছরে কোনো কাজ করতে পারিনি। তবে সমাজের বিত্তশালীরা আমাকে সহযোগিতা দিয়ে কৃত্রিম হাতের ব্যবস্থা করলে ঘুরে দাঁড়াতে পারব এই স্বপ্ন দেখি। 

রাজন আরও বলেন, কেউ যদি আমার ঘরটি মেরামতে সহযোগিতা করে ভালো হবে। কোনো সহৃদয়বান ব্যক্তি যদি আমার জন্য দুইটি কৃত্রিম হাতের ব্যবস্থা করে দেন তাহলে অনেক উপকার হবে। আপনাদের সহযোগিতা নিয়েই আমি মা ও ছেলেকে নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই। 

রাজনের মা ফাতেমা খাতুন বলেন, ছেলের দুইটি কৃত্রিম হাতের ব্যবস্থা হলে কোনোমতে দুবেলা খেয়ে বাঁচতে পারতাম। এছাড়া জরাজীর্ণ ঘরটিও থাকার অনুপযোগী হয়ে গেছে। 

রাজনকে সহায়তা করতে চাইলে তার ব্যবহৃত ০১৬১৬৫০৬২০৮ (নগদ) অথবা ০১৬১০৩৪৭৩৭৯ নম্বরে যোগাযোগ করার অনুরোধ করেছেন তিনি।

ফুলগাজী সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সেলিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাজনের বিষয়টি জানতাম না। তবে খোঁজ নিয়ে আমার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার চেষ্টা করব। 

তারেক চৌধুরী/আরকে