আহত শিক্ষার্থী

চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা উপজেলার গোকুলখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে চেয়ার ভাঙার অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হামিদুল হকের বিরুদ্ধে। বুধবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে ওই বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

ওই শিক্ষার্থীর নাম মোস্তাফিজুর রহমান (১৪)। সে চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা উপজেলা চিৎলা ইউনিয়নের কুলপালা গ্রামের কবরস্থান পাড়ার আনারুল ইসলামের ছেলে এবং গোকুলখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত হামিদুল হক শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক। 

শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল আমাদের বার্ষিক ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা চলাকালীন প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে যাই আমি। যাওয়ার সময় আমার কাছে থাকা মোবাইলটি নিয়ে নেন ওই কক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক হামিদুর হক। পরে তিনি প্রধান শিক্ষকের নিকট মোবালই ফোনটি জমা দিয়ে দেন। পরীক্ষা শেষে হামিদুল স্যারের কাছে মোবাইল ফোনটা চাই। তিনি বলেন, অবিভাবক ছাড়া মোবাইল দেওয়া যাবে না। তাদেরকে ডেকে নিয়ে এসো। 

কিছুক্ষণ পর আমি নিজেই ওই স্যারের কাছে গিয়ে বলি, স্যার আর কোনোদিন স্কুলে মোবাইল নিয়ে আসব না। তিনি আমাকে তার সামনে থেকে সরে যেতেন বলেন। তৃতীয়বার গ্রামের ইউপি সদস্যের ছেলে আমাকে নিয়ে যান স্যারের কাছে। এরপর আমি হামিদুল স্যারকে ‘শোনেন’ বলতেই তিনি প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে আমাকে বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে চেয়ার ভেঙে যায়। 

ওই শিক্ষার্থীর বাবা আনারুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ছেলে এমন কোনো কঠিন অন্যায় করেনি যে এভাবে নির্মমভাবে মারধর করতে হবে। আমার ছেলের বিরুদ্ধে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে সে নাকি পরীক্ষা চলাকালে হলরুমে ধুমপান করেছে। এটা মিথ্যা বানোয়াট। কি এমন অন্যায় করেছে এ জন্য এমনভাবে মারধর করতে হলো? আমি ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি করছি। আমি গরিব হতে পারি তবে আমার ছেলের বিচারের জন্য প্রয়োজনে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে যাব।

এ বিষয়ে জানতে শিক্ষক হামিদুল হকের ব্যক্তিগত নম্বরে একাধিকবার কল করলেও মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। 

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রবিউল ইসলাম ঝন্টু ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। শুনেছি ওই শিক্ষার্থী মোবাইলের ইন্টারনেটের মাধ্যমে উত্তরপত্র ডাউনলোড করেছিল আর পরীক্ষা হলের মধ্যেই ধুমপান করছিল। তবে ওই শিক্ষক মারধর করে অন্যায় করেছেন। এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো অভিযোগ দেয়নি ভুক্তভোগী। 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক ঢাকা পোস্টকে বলেন, পরীক্ষা শেষে এক শিক্ষার্থী তার মোবাইল নিতে এসেছিল। যেহেতু মোবাইল কার এটা আমি জানি না। তাই যে শিক্ষক মোবাইল জব্দ করেছে তার কাছ থেকে ফোনটা বুঝে নেওয়ার জন্য বলি। এরপর আমি স্কুল থেকে বাড়ি চলে আসি। বিকেলে ওই শিক্ষার্থীর বোন আমাকে বিষয়টি জানান। তবে চেয়ার দিয়ে যদি মারধর করে থাকে এটা অন্যায় হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আজ আমরা সবাই বসব।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. হাসানুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মোস্তাফিজুরের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এক্স-রে করা হয়েছে। তবে কোনো হাড় ভাঙেনি। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। 

আফজালুল হক/আরকে