জব্বার আলীর কাছে অটোরিকশা হস্তান্তর করেন পুলিশ সুপার

পাবনার আতাইকুলা থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) হাসান আলীর (২৮) আত্মহত্যার ২২ দিনের মাথায় তার ভ্যানচালক বাবা জব্বার আলীকে একটি নতুন অটোরিকশা ও নগদ অর্থ প্রদান করা হয়েছে। সোমবার (১২ এপ্রিল) বিকেলে পাবনার পুলিশ সুপার (এসপি) মহিবুল ইসলাম খান নিজ কার্যালয়ে ভ্যানচালক জব্বার আলীর কাছে অটোরিকশা ও নগদ টাকা হস্তান্তর করেন। 

এসআই হাসান আলী যশোরের কেশবপুর উপজেলার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি আতাইকুলা থানায় যোগ দেন। এর প্রায় দেড় মাসের মাথায় তিনি আত্মহত্যা করেন। 

এসআই হাসানের বাবা জব্বার আলী বলেন, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রাতদিন ভ্যান চালিয়ে ছেলেকে মানুষ করেছিলাম। স্বপ্ন দেখেছিলাম ছেলে পুলিশে চাকরি করে পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করবে, পরিবারের হাল ধরবে, সেই সঙ্গে দেশ ও সমাজের জন্য নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ হলো না। ছেলে আমার না ফেরার দেশে চলে গেছে। কোনোদিন সে ফিরে আসবে না। 

তিনি বলেন, আপনাদের ভালোবাসা চিরদিন মনে রাখবো। ছেলের জন্য দোয়া করবেন, সে যেন জান্নাতবাসী হয়।

পাবনার পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান বলেন, গত মাসে আতাইকুলা থানায় কর্মরত এসআই হাসান আলী মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে আত্মহত্যা করেন। তার বাবা একজন দরিদ্র ভ্যানচালক। অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করে তার পরিবার। আমাদের সহকর্মীর অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টা হিসেবে জেলা পুলিশের সকল সদস্যের অর্থায়নে হাসানের বাবাকে একটি নতুন অটোরিকশা প্রদান করা হয়েছে। যেটা দিয়ে তিনি জীবিকা নির্বাহ করবেন, সংসার চালাবেন। এছাড়াও নগদ অর্থ প্রদান করা হয়েছে।  পাবনা জেলা পুলিশ সব সময় হাসানের পরিবারের পাশে থাকবে। 

তিনি বলেন, এসআই হাসানের আত্মহত্যা আমাদের সকলকে ব্যথিত করেছে। জেলা পুলিশ একজন নিবেদিত প্রাণ এসআইকে হারিয়েছে।

অটোরিকশা প্রদানকালে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মাসুদ আলমসহ জেলা পুলিশের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। 

উল্লেখ্য, গত ২১ মার্চ সকালে আতাইকুলা থানা ভবনের ছাদের ওপর থেকে এসআই হাসান আলীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ২০ মার্চ দিবাগত রাত ২টার পর কোনো এক সময় থানার ছাদে পিস্তল দিয়ে মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেন তিনি। 

রাকিব হাসনাত/আরএআর