জাতীয় পার্টির রংপুর জেলা, মহানগরসহ সকল অঙ্গসংগঠনের সমন্বয়ে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণের জন্য যৌথ কর্মীসভা হয়েছে। শনিবার (১৮ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় নগরীর সেন্ট্রাল রোডের দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সভা থেকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটগতভাবে নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মতামত তুলে ধরেন পার্টির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। 

সভায় জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির আহমেদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য, মহানগর ও জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি, সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা আলাউদ্দিন মিয়া, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাক, মহানগর জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন, সহ-সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, জেলা যুব সংহতির সভাপতি হাসানুজ্জামান নাজিম, সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মাসুদ নবী মুন্না, পীরগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি নূরে আলম যাদুসহ জেলা, উপজেলা, মহানগর, ওয়ার্ড কমিটি এবং অঙ্গসংগঠনসহ প্রায় ৪০ জন নেতা।

এতে জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও মহানগর সম্পাদক এসএম ইয়াসির আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কেউ গেলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আমাদের প্রয়াত চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদকে আওয়ামী লীগ জীবিত অবস্থায় কারাগারে রেখেছিল, মারা যাওয়ার পরও তার মরদেহ দেখতে দেওয়া হয়নি। আমরা আসন্ন নির্বাচনকে বর্জন করে জনগণকে জানাতে চাই জাতীয় পার্টি আর আওয়ামী লীগের দালাল নেই।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির জরুরি সভায় ঢাকার একজন নেতা ব্যতীত সব জেলার নেতারা নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছেন। আমাদের কিছু এমপি রয়েছে তারা মহাজোটে নির্বাচন করতে চায়, কারণ স্থানীয় পর্যায়ে তাদের কোনো ভোট নেই। তারা লবিং করে ঘরে বসে এমপি হতে চায়। 

তিনি আরও বলেন, আন্দোলন সংগ্রাম করলে জেল খাটতে হবে, রক্ত ঝরাতে হবে। এটি রাজনীতির অংশ। আমরা বিএনপির মত গলিতে আন্দোলন করবো না। আমরা পুরো রংপুরকে অচল করে দেব। আমি বঙ্গবন্ধুর মত বলে যাচ্ছি, যদি হুকুম দিতে নাও পারি কেন্দ্রীয় কমিটির ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে নেতাকর্মী, জেলা, উপজেলা, মহানগরের ওয়ার্ডের রাজপথে নেমে পড়বেন। আন্দোলনে অফিস আদালত সবকিছু বন্ধ থাকবে। আর যদি নির্বাচনে যেতেই হয়, তবে আমাদের ১০০ আসন দিতে হবে, ১০টি মন্ত্রীর পদ দিতে হবে। এবার জাতীয় পার্টির কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নিলে মাঠ পর্যায়ে আমাদের অস্তিত্ব থাকবে না।

দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলেন, মহাজোটে থেকে জাতীয় পার্টি দালালের দলে পরিণত হয়েছে। এখন সময় ঘুরে দাঁড়ানোর। জনগণের ভাষা বুঝে দলের চেয়ারম্যানকে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই, যাতে জাতীয় পার্টিকে আর বিতর্কিত হতে না হয়। রাজপথের আন্দোলন আর নির্বাচন, দুটোর জন্য আমরা প্রস্তুত। তবে চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তের দিকে আমরা তাকিয়ে আছি। 

সভায় জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা ছাড়াও যুব সংহতি, ছাত্রসমাজ, স্বেচ্ছাসেবক পার্টি, শ্রমিক পার্টি, মহিলা পার্টি, ওলামা পার্টি, সাংস্কৃতিক পার্টিসহ বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এএএ