টাঙ্গাইলের ভুঞাপু‌রে সোনালী ব্যাংক গো‌বিন্দাসী শাখায় গ্রাহকের সঞ্চয়প‌ত্রের টাকা আত্মসা‌তের অভিযোগ উঠেছে সাবেক ম্যানেজারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় এলাকায় মাইকিং করায় ব্যাংকে পু‌লিশ মোতায়েন করা হ‌য়ে‌ছে। প‌রে ভুক্ত‌ভোগী গ্রাহকরা এক‌ত্রিত হ‌য়ে ইউএনওর কা‌ছে প্রতিকার চে‌য়ে অ‌ভি‌যোগ ক‌রে। 

সোমবার (২০ নভেম্বর) দুপু‌রে সোনালী ব্যাংকের অর্ধশতা‌ধিক গ্রাহক উপ‌জেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কা‌ছে অ‌ভি‌যোগ ক‌রেন। প‌রে কার্যাল‌য়ের সামনে সমা‌বেশ ক‌রে। এতে নেতৃত্ব দেন গো‌বিন্দাসী ইউপি চেয়ারমান দুলাল হোসেন চকদা‌র। 

এর আগে ১৯ ন‌ভেম্বর গো‌বিন্দাসী এলাকায় ভুক্তভোগীদের এক‌ত্রিত হওয়ার জন্য মাইকিং ক‌রে ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল হোসেন চকদা‌র তার গরুর ফা‌র্মে সবাইকে আসার আহ্বান জানান। এদি‌কে এলাকায় মাইকিং করার ঘটনায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার জন্য পুলিশি নিরাপত্তা চাওয়ায় সোনালী ব্যাংক গো‌বিন্দাসী শাখার সামনে পু‌লি‌শ মোতা‌য়েন করা হয়।

জানা গেছে, অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম ম্যানেজার হিসেবে সোনালী ব্যাংক গোবিন্দাসী শাখায় ২০২০ সালে যোগদান করে। এরপর দীর্ঘ ৩ বছর ২ মাস সেখানে কর্মরত ছিলেন তিনি। এই দীর্ঘ সময়ে তথ্য প্রযুক্তিতে মেধাসম্পন্ন শহিদুল ইসলাম কৌশলে ব্যাংকের ১৩০ জনের সঞ্চয়পত্রের টাকা লুজ চেকের (জরুরি উত্তোলনের জন্য একক পাতা) মাধ্যমে অন্য অ্যাকাউন্টে ৫ কোটি ১১ লাখ টাকা সরিয়ে নেন। এছাড়া উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের হতদরিদ্রদের ভাতার ৬ লাখ ৮১ টাকাও গায়েব করেছেন বলে অভিযোগ আছে।

অভিযুক্ত ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম তার বড় ভাই মহির উদ্দিনের তালুকদার এগ্রো ফার্ম, কালিহাতী উপজেলার আদাবাড়ি গ্রামের খালেদা বেগম ও তার বন্ধুদের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে টাকা আত্মসাৎ করেন। টাকা আত্মসাতের অপরাধে ইতোমধ্যে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাকে বরখাস্ত করেছে।

ভুক্ত‌ভোগী গ্রাহকরা বলছেন, দীর্ঘদিন হলো ব্যাংকের তৎকালীন ম্যানেজার শ‌হিদুল ইসলাম ৫ কো‌টির বে‌শি টাকা আত্মসাৎ ক‌রে‌ছেন। এখনও কেউ টাকা ফেরত পা‌চ্ছি না। ওই ম্যানেজারও প্রকা‌শ্যে ঘু‌রে বেড়াচ্ছে। আমরা টাকা ফেরত দেওয়াসহ ম্যানেজা‌রের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। 

সোনালী ব্যাংক গোবিন্দাসী শাখা ম্যানেজার ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, এলাকায় মাইকিংয়ের ঘটনায় ব্যাংক অ‌নিরাপদ মনে হওয়ায় পু‌লি‌শের কা‌ছে নিরাপত্তা চাওয়া হয়। প‌রে ব্যাংকে পু‌লিশ মোতায়েন করা হয়। 

গো‌বিন্দাসী ইউনিয়ন প‌রিষ‌দের চেয়ারমান দুলাল হোসেন চকদা‌র ব‌লেন, গ্রাহক‌দের এক‌ত্রিত হওয়ার জন্য এলাকায় মাইকিং করা হ‌য়ে‌ছিল। টাকা না পে‌য়ে গ্রাহকরা হতাশ। সব গ্রাহক গি‌য়ে ইউএনও‌কে জানি‌য়ে‌ছেন। তি‌নি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দি‌য়ে‌ছেন।

উপ‌জেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন ব‌লেন, গ্রাহকরা তা‌দের সঞ্চয়প‌ত্রের টাকা আত্মসা‌তের বিষয়‌টি নি‌য়ে অ‌ভি‌যোগ দি‌য়েছেন। বিষয়‌টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখব।

অ‌ভি‌জিৎ ঘোষ/আরকে