দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার এক সপ্তাহ পার হলেও এখনো নির্বাচন কমিশন থেকে দেওয়া হয়নি বৈধ অস্ত্র জমা দেওয়ার নির্দেশনা। এদিকে নির্দেশনার পরও সম্ভাব্য প্রার্থীদের পক্ষ থেকে জামালপুর জেলাজুড়ে সাঁটানো ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড ও তোরণ অপসারণ হয়নি।

সচেতন নাগরিকরা বলছেন, তফসিল ঘোষণার পর জামালপুর-৫ (সদর) আসনের আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কঠোর না হলে প্রার্থীরা নির্দেশনা মানতে চাইবেন না। এতে আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা বাড়বে। কমিশনকে সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্পন্ন করতে এখন থেকেই কঠোর অবস্থানে থাকবে হবে। শুধু তা-ই নয়, বৈধ অস্ত্র জমাদানের কোনো নির্দেশনা না আসায় নির্বাচনে বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহারের আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে বৈধ অস্ত্রধারীদের গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা প্রয়োজন।

জামালপুর সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সাত দিন চলে যাচ্ছে। কিন্তু এখনো নির্বাচন কমিশন থেকে দেওয়া হয়নি বৈধ অস্ত্র জমা দেওয়ার নির্দেশনা। এদিকে জামালপুরে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে। যতদিন যাচ্ছে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ততই খারাপ হচ্ছে। অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে নির্বাচনে প্রার্থীদের পক্ষে বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার হতে পারে। এতে ঘটতে পারে প্রাণহানিসহ নানা দুর্ঘটনা। তাই নির্বাচনের আগমুহূর্তে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি বৈধ অস্ত্র জমা নেওয়া জরুরি।

তিনি আরও বলেন, জেলায় মনোনয়নপ্রত্যাশী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অনেকদিন ধরেই প্রচার-প্রচারণা করছে। তবে তাদের ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড ও তোরণ এখনো অপসারণ হয়নি।

এদিকে জামালপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নবায়ন সংক্রান্ত একটি গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্রধারীগণের জামালপুর জেলা ম্যাজিস্ট্রেসি হতে ইস্যুকৃত আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্সসমূহ ২০২৪ হতে ২০২৬ সালের জন্য উপজেলা ভিত্তিক তারিখে ও সময়ে নবায়ন করতে হবে। ৩ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শফিউর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখনো বৈধ অস্ত্র জমা দেওয়ার নির্দেশনা আসেনি। জেলায় পোস্টার-ফেস্টুন অপসারণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অপসারণ করার কাজ চলছে।

উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়ন আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত এবং ভোটগ্রহণ ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।

রকিব হাসান নয়ন/এমজেইউ