ধানখেত পরিদর্শন করছেন জনপ্রতিনিধিরা

ধান গবেষণা কেন্দ্রের উদ্ভাবিত নতুন ধান-৮৮ চাষে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। শেষে রোপণ এবং সবার আগে কেটে ঘরে তোলা যায় বলে এ ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকরা। এ জাতের ধান সাধারণত রোপণের ১২০ থেকে ১৩০ দিনের মধ্যেই কাটা যায়।

সূত্রমতে, হবিগঞ্জ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত নতুন ধান-৮৮ চাষ করে হাজারো কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। নতুন এ জাতের ধান আগাম বন্যা, শিলাবৃষ্টি ও বৈশাখী ঝড়ের আগেই কেটে ঘরে তোলা যায় বলে ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে হাজারো কৃষক।

কৃষকরা জানান, ৮৮ জাতের ধান সবার শেষে রোপণ করে সবার আগে কেটে নিয়ে আসা যায়। এবার ফলনও হয়েছে বাম্পার। অন্যান্য জাতের ধানের চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। প্রতি কের (৩৪) শতকে ২২ থেকে ২৫ মণ ধান ফলন হয়েছে।

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার আব্দুল্লাহপুর গ্রামের কৃষক সলিম উল্ল্যাহ জানান, শুধুমাত্র আগাম বন্যা থেকে রক্ষা ও বৈশাখী ঝড় থেকে বাঁচতে ধান-৮৮ চাষ করেছিলাম। এ ধানের ফলন অত্যন্ত ভাল হয়েছে। আগাম বন্যার আগেই ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি।

পার্শ্ববর্তী শিকান্দরপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল হক জানান, আমি গুঙ্গিয়াজুরি হাওরে ৮৮ জাতের ধান রোপণ করেছিলাম। এবার ফলন ভাল হয়েছে। প্রতি কেরে ২০ থেকে ২২ মণ ধান হয়েছে। সবার শেষে রোপণ করে সবার আগে ধান কেটেছি। এতে আনন্দ লাগছে।

একই গ্রামের কৃষক আব্দুল্লাহ মিয়া জানান, ৮৮ জাতের ধান আগাম বন্যা থেকে আমাদের রক্ষা করেছে। বৈশাখ শুরুর আগেই ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি। এতে করে আমরা আগাম বন্যা থেকে রক্ষা পেয়েছি।

তিনি বলেন, বৈশাখ এলেই আমাদের ঝড়-বৃষ্টি ও আগাম বন্যার চিন্তা থাকে। ৮৮ জাতের ধান আগামবন্যা থেকে রক্ষা করে। এ জন্য আমাদের এলাকার অনেক কৃষক এ জাতের ধান চাষ করেছেন। তাদের ফলনও হয়েছে বাম্পার।

কৃষক শাহিদ মিয়া বলেন, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তাদের আশ্বাসে এ বছর ৮৮ জাতের ধান চাষ করেছিলাম। ভাল ফলন হয়েছে। আগাম বন্যার আগেই আমরা ধান কাটতে পেরে মহাখুশি। এ জাতের ধান চাষ করতে অনেক কৃষক আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

হবিগঞ্জ এসেডির চিফ প্রোগ্রাম জামিল মোস্তাক জানান, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহায়তায় আমরা কৃষকদের ৮৮ জাতের ধান চাষ করার জন্য উৎসাহ দিয়েছি। এ ধান আগাম বন্যা থেকে কৃষকদের রক্ষা করে। পাশাপাশি শিলাবৃষ্টি ও বৈশাখি ঝড় থেকেও রক্ষা করে।

হবিগঞ্জ এসেডের নির্বাহী পরিচালক জাফর ইকবাল চৌধুরী বলেন, প্রতি বছর গুঙ্গিয়াজুরি হাওরে আগাম বন্যায় কৃষকের ধান নষ্ট হয়ে যায়। এই সমস্যা নিয়ে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে কথা বলি। তারা পরামর্শ দেন, তাদের উদ্ভাবিত ধান-৮৮ কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিলে আগাম বন্যা থেকে রক্ষা পাবে। এ জাতের ধান চাষ করে এখানকার কৃষকরা অনেক লাভবান হয়েছেন। 

হবিগঞ্জ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ১০০ জাতের ধান আবিষ্কার করেছে। তার মধ্যে ধান-৮৮ কৃষকদের মাঝে বিতরণ করেছি। এই ধান কম সময়ে অধিক ফলন দেয়।

এসপি