কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার সাহেবের চর এলাকায় নিজের প্রতিষ্ঠানে কর্মরত তিন ভাইয়ের গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন সৌদি মালিক আহমেদ হলিবি ও তার ছেলে আব্দুল লিলা হলিবি। এ সময় হোসেনপুর পৌর এলাকা ঘুরে দেখার জন্য ছেলেকে নিয়ে বের হোন এই সৌদি নাগরিক। গ্রামীণ সবুজ পরিবেশ দেখে তারা মুগ্ধ হন। তাই গ্রামের অপরূপ সৌন্দর্যের বর্ণনা দিতে গিয়ে একে জান্নাতের সঙ্গে তুলনা করেছেন সৌদি মালিক আহমেদ হলিবি।

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে চড়ে উপজেলার পৌর এলাকার ঢেকিয়া খেলার মাঠে নামেন তারা। সেখানে সৌদি মালিক ও তার ছেলেকে দেখতে ভিড় করেন উৎসুক জনতা। ফুলের মালা দিয়ে অভিনন্দন জানান গ্রামবাসী। পরে কর্মচারীদের বাসায় যান তারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সৌদি নাগরিককে দেখতে এলাকাবাসী ভিড় জমাচ্ছেন। যেখানেই যাচ্ছেন সেখানেই মানুষের উপস্থিতি। কয়েকদিন ধরে গ্রামের পরিবেশ ঘুরে দেখেন তারা।

একই এলাকার আমির উদ্দিন হাজী সৌদিতে দীর্ঘ ২৪ বছর ছিলেন তাদের প্রতিষ্ঠানে, নিজের প্রতিষ্ঠানের সাবেক কর্মচারীর খোঁজ খবর নিতে ছেলেকে নিয়ে আমির উদ্দিনের বাড়িতে যান এই সৌদি নাগরিক। আহমেদ হলিবি জানান, গ্রামীণ এই পরিবেশ তার খুব ভালো লেগেছে। এখানের পরিবেশ জান্নাতের মতো। এ সময় তাদের আতিথেয়তার প্রশংসাও করেন তিনি।

তিনি বলেন, পুরো এলাকা ঘুরে দেখলাম। বাংলাদেশে আসতে পেরে আমি অনেক খুশি। হামিদ, খাইরুল ও সাহিদ শুধু আমার কর্মচারী না আমার সন্তানের মতো। তারা খুবই সৎ, আমার প্রতিষ্ঠানে সততার সঙ্গে কাজ করেন।

হাজী আমির উদ্দিন বলেন, আমি ২৪ বছর এই মালিকের অধীনে চাকরি করেছি সৌদি আরবে। আমার মালিক আমার গ্রামের বাড়িতে এসেছেন দেখে সত্যিই অনেক ভালো লাগছে। আমি পুরো বাড়ি ঘুরে দেখিয়েছি উনার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।

প্রবাসী কর্মচারী আব্দুল খাইরুল বলেন, আমাদের গ্রামের বাড়িতে আমাদের কপিল (মালিক) কে নিয়ে এসেছি। গ্রামের পরিবেশ দেখে তারা অনেক আনন্দিত। উনারা (মালিক ও তার ছেলে) কয়েকদিন থেকে আমাদের গ্রাম ঘুরে দেখবেন।

উল্লেখ্য, উপজেলার সাহেবের চর গ্রামের তিন সহোদর খাইরুল ইসলাম (৪০) আব্দুল হামিদ (৩৫) ও সারোয়ার হোসেন সাহিদ (৩০) চাকরি করেন সৌদি আরবের দাম্মাম আল হাচা শহরে। সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দা আহমেদ হলিবির প্রতিষ্ঠানে। তিন জনই উপজেলার সিদলা ইউনিয়নের সাহেবের চর গ্রামের মৃত চান মিয়ার ছেলে। দীর্ঘদিন একই প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুবাদে কপিল (মালিক) আহমেদ হলিবির সঙ্গে একটা সখ্যতা গড়ে উঠে তাদের। অর্জন করেছেন সৌদি মালিকের আস্থা ও ভালবাসা। সন্তানের ন্যায় যত্ন করেন তাদের। তাইতো সেই সম্পর্কের টানে বাংলার সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সম্পর্কে জানার আগ্রহ নিয়ে কর্মচারীদের বাড়ি ছুটে এসেছেন বাংলাদেশে।

মোহাম্মদ এনামুল হক হৃদয়/এএএ